মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:৩৩:১৩

অবশেষে যে সমাধান মিলল সাকার ফিশ সমস্যার

অবশেষে যে সমাধান মিলল সাকার ফিশ সমস্যার

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সাধারণভাবে সাকার ফিশকে একটি বিষাক্ত ও নিম্নমানের মাছ হিসেবে ধরা হয়। এর প্রভাবে নদীতে মাছ কমে যাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে বিপর্যয়ের। তবে এ সমস্যার সমাধানও মিলেছে। সাকার ফিশ থেকে সুষম ও মানসম্পন্ন প্রাণিখাদ্য তৈরিতে সাফল্য পেয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) একদল শিক্ষার্থী, গবেষক ও উদ্যোক্তারা।

প্রায় এক বছর ধরে গবেষণার মাধ্যমে দলটি সাকার ফিশ ব্যবহার করে বিড়ালসহ বিভিন্ন প্রাণীর জন্য পুষ্টিকর খাদ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়। এরই মধ্যে এ খাদ্যের মাঠপর্যায়ের ট্রায়ালও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পুরো গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে আন্তর্জাতিক সংগঠন ইয়াস ওয়ার্ল্ড।

প্রকল্প নিয়ে ইয়াস ওয়ার্ল্ড আয়োজিত গ্লোবাল প্রজেক্ট কম্পিটিশন ২০২৪-এ অংশগ্রহণ করে সারাবিশ্বে চতুর্থ হন এই তরুণ গবেষকরা। তাদের প্রজেক্টটির থিম ছিল 'সাকার ফিশ থেকে প্রাণিখাদ্য তৈরি'।

প্রজেক্টটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের প্রফেসর ড. কাজী আহসান হাবীব, ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের লেকচারার নাজমুস সাকিব অনিক, এনিম্যাল সায়েন্স ও ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের প্রফেসর গোলাম মোহাম্মদ পাটোয়ারী এবং লেকচারার আব্দুর রহমান রাফি।

প্রজেক্টটির সদস্য, শেকৃবির শিক্ষার্থী নিয়ামুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে চলমান 'ওয়েস্ট টু ওয়েলদ' থিমের পাশাপাশি আমরা 'প্রব্লেম টু ওয়েলদ' থিম প্রতিষ্ঠা করে দেখাতে চেয়েছি। আমরা দেখিয়েছি, কীভাবে সাকার ফিশের মতো একটি সমস্যাকে সহজেই সম্পদে রূপান্তর করা যায়। আমরা খাদ্যটি প্রথমবারের পরীক্ষায় ৭০ শতাংশ সাফল্য পাই। দ্বিতীয়বারও আমরা আশানুরূপ ফলাফল পেয়েছি। এখন কমার্শিয়াল কোনো কোম্পানির মাধ্যমে এ খাদ্যটি বাজারজাত করতে পারলে প্রাণিখাদ্যের আমদানির ওপর চাপ কমবে বলে আশা রাখছি।

প্রজেক্টটির সুপারভাইজার প্রফেসর ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, সাকার ফিশ জলজ ইকোসিস্টেমের জন্য ক্ষতিকর। সাকার ফিশ এখন বুড়িগঙ্গা থেকে হাওর অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত, যা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই প্রয়োজন কিন্তু কষ্টসাধ্য। এর ধারাবাহিকতায় শেকৃবিতে গবেষণার চেষ্টা করছি, কীভাবে সাকার ফিশ থেকে পোলট্রি, বিড়াল, কুকুরসহ অন্যান্য পোষা প্রাণীর খাদ্য তৈরি করা যায়। সাকার ফিশ থেকে তৈরি খাদ্যটি আমরা বিড়ালের মাধ্যমে পরীক্ষা করেছি, যা আশানুরূপ ফলাফল দিয়েছে। খাদ্যটি বিড়াল খাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি খাদ্যটির আরও ফর্মুলেশনের মাধ্যমে বিড়াল ছাড়াও কুকুর, পোলট্রির জন্য উপযুক্ত করা। কোনো কমার্শিয়াল কোম্পানির মাধ্যমে যদি আমরা এটি বাজারজাত করতে পারি তাহলে আপাতত সাকার ফিশ নিয়ন্ত্রণের একটি উপায় পাবো। শুধু বিড়ালের নয়, বিভিন্ন অপ্রচলিত জৈববস্তু দিয়ে পোলট্রি, মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর খাদ্য তৈরির প্রচেষ্টা চলছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে