শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫, ০৩:১৬:০৬

হঠাৎ দাম কমে রাজধানীতে চালের কেজি কত হলো জানেন?

হঠাৎ দাম কমে রাজধানীতে চালের কেজি কত হলো জানেন?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দীর্ঘ দিন পর নিম্মমুখী বাজারে চালের দাম। বাজারে ইরি-বোরো ধানের নতুন চাল আসায় দাম কমেছে। অন্যদিকে গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কম থাকায় প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে সবজির দর। দাম বেড়েছে মাছেরও। বেশি দাম দেখা গেছে মুরগির বাজারেও।

আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। 

রামপুরা, খিলগাঁও ও তালতলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন মিনিকেট চাল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৮০ টাকায়। যেখানে পুরোনো একই চালের দাম ৭৮ থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত। সে হিসাবে চালের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৪ থেকে ৮ টাকা কমেছে। তালতলা বাজারে চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। এখন প্রতিবস্তা মিনিকেটের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।

তিনি বলেন, বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই কমেছে। তবে পুরোনো কোনো চালের দাম এখনো কমেনি।

এদিকে বাজারে মোটা চাল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, মাঝারি চালের দাম ৬৪ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি সরু নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে। 

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর বাজারে চালের দাম কমছে। গত বছরের শুরুতে বন্যার কারণে চালের দাম বেড়েছিল, এরপর বছরখানেক প্রায় চড়া ছিল বাজার। এবার বোরো ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে, ফলে বাজারে চালের দাম আরও কিছুটা কমতে বলে মনে করছেন তারা।

উত্তরার আজমপুর ও খিলক্ষেত কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজিই এখন ৬০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ৭০ টাকার নিচে পছন্দের কোনো সবজি মিলছে না। হাতে গোনা কয়েকটি সবজি এর ব্যতিক্রম। প্রায় প্রতিটি সবজি ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

আজকের বাজারে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, বেগুন ৭০-১০০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৭০ টাকা, ঝিঙে ৭০-৮০ টাকা এবং টমেটো ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে পেঁপে ৭০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শসা ৫০-৬৫ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা এবং সজনে ডাটা ১২০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি চালকুমড়া ৪০ টাকা এবং লাউ ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার এবং সবজির মান আকারভেদে দাম কমবেশি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ এখনো পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি। তাছাড়া শীতকালীন সবজির সরবরাহও প্রায় শেষের দিকে।

মাছের বাজারেও বেশ চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। এতে নদীর কিছু মাছের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি জাটকা ধরা বন্ধ থাকায় অনেক নদীতে মাছ আহরণ বন্ধ আছে। যে কারণে দাম বেড়েছে ইলিশসহ চিংড়ি মাছের দাম।

প্রতিকেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে। এছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতিকেজি চাষের রুই, কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আলুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আদা ১২০ টাকা কেজি, আমদানি করা রসুন ১৮০-২২০ টাকা এবং দেশি রসুন ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরু ও খাসির মাংসের দামও আগের মতো রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহে মুরগির দাম কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কিছুটা কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১০-২০ টাকা বেশি। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০-৩০ টাকা বেড়ে ২৭০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা এবং লাল লেয়ার ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের দাম জাতভেদে প্রতি পিস ৬০০-৭০০ টাকা। 

বেশ কয়েক সপ্তাহ নিম্নমুখী ডিমের দরে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দামে। মাসখানেক ধরেই এই দামের আশপাশে রয়েছে ডিমের দর।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে