এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ভারতকে এড়িয়ে এয়ার ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতার কাছে তৈরি পোশাক পাঠানোর সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর। সরকারের অনুমতি পেলে চলতি মাসেই শুরু হবে এয়ার শিপমেন্ট। এজন্য ২৭০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার দুটি ওয়্যার হাউজ যেমন প্রস্তুত করা হয়েছে, তেমনি সচল করা হয়েছে দুটি স্ক্যানার এবং ওয়েট মেশিন।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের দুটি স্ক্যানার মেশিনই এখন সচল। প্রতিনিয়ত কর্মকর্তারা সেগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন। খালি করে রাখা হয়েছে ১৭০ এবং ১২০ মেট্রিক টন পণ্য ধারণ সক্ষমতার দুটি ওয়্যার হাউজ। ওয়েট মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও স্থাপনের কাজ শেষের পথে।
অনুমোদন পেলে চলতি মাসেই চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে এয়ার শিপমেন্টের সুযোগ পাবেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, ট্রাক থেকে কার্গো নামানোর পরে সিকিউরিটি প্রটোকল অনুযায়ী চেকিং করা হবে। এরপর সেটি কাস্টমস যাচাই-বাছাই করে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট বিমানে পাঠানো হবে। তারপর পণ্য রফতানি হবে।
দুটি ইপিজেডের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন স্থানে চারশোর বেশি গার্মেন্টস কারখানা থাকলেও এয়ার শিপমেন্টের ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল চট্টগ্রাম।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কার্গো রফতানি করার জন্য বিমানবন্দরে কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। যার কারণে পণ্যগুলো এয়ার শিপমেন্টের জন্য ঢাকা পাঠাতে হয়। তবে সেখানে শিডিউল পাওয়া নিয়ে জটিলতায় অনেক কষ্ট হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, চট্টগ্রামে এয়ার শিপমেন্টের ব্যবস্থা যতদ্রুত সম্ভব চালু করা দরকার। এতে ব্যবসায়ীরা পণ্য রফতানি ব্যাপক সুবিধা পাবে।
২০০৫ সাল থেকে ইত্তেহাদ এবং এয়ার এমিরেটসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সরাসরি কার্গো পণ্য পাঠানোর ব্যবস্থা চালু থাকলেও ২০২১ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। গত চার বছর চট্টগ্রাম থেকে বিশেষায়িত কার্গো বিমান চলাচল বন্ধ থাকলেও যাত্রীবাহী বিমানে করে পণ্য পাঠানোর সুযোগ নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে এবার শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে এয়ার শিপমেন্ট চালু করতে তিনটি ভাগে চলছে সংস্কার কাজ। এরই মধ্যে কাস্টমসও বিমানবন্দরের কার্গো শাখায় স্থায়ীভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, প্রস্তুতির ৩টি অংশ রয়েছে। এরমধ্যে ওয়্যারহাউজ ক্যাপাসিটি, যার সক্ষমতা রয়েছে ২৭০ টন। যা দিয়ে সপ্তাহে ২টি ওয়াইড বোর্ড কার্গো ফ্লাইট হ্যান্ডেল করতে সক্ষম।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ৭ লাখ ৩২ হাজার কেজি এবং ২০২৪ সালে ৪৩ লাখ ১২ হাজার কেজি কার্গো পণ্য পাঠিয়ে ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা আয় করেছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর।