এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো চার যুবক বিষপান করেছেন। জানা গেছে, পকেটে করে তারা আগেই বিষ নিয়ে আসেন এবং মিটিং চলাকালীন হাসপাতাল পরিচালকের রুমে এসে বিষপান করেন।
রোববার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে একটি বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী।
বিষপানকারীরা হলেন- শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (আবু তাহের)। পরে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে চলমান বৈঠকের সময় ওই চারজন দাবি নিয়ে তার কক্ষে যান। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই বিষপান করেন তারা।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জুলাই গণ-আন্দোলনে চোখ হারানো আহতরা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘ ৯ মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা বাহানা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবে ঘটেনি।
হিল্লোল নামক আহত একজন বলেন, ‘এই সরকারের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে আন্দোলনে নামতেই হয়। শান্তিপূর্ণভাবে কিছু চাওয়া যায় না। আমাদের চিকিৎসার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।’
অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে ভর্তি থাকা চারজন আজ বিষপান করেছেন। তারা আগেই পকেটে করে বিষ নিয়ে আসেন; কিন্তু আমার রুমে এসে মিটিং চলাকালীন তাদের এই কর্মকাণ্ডে আমরা খুবই অবাক হয়েছি। ঠিক কী কারণে তারা এমন করেছেন আমরা কিছুই জানি না।
তিনি বলেন, তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বর্তমানে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। আমরা সাধারণ রোগীদের শয্যা ফাঁকা করে দীর্ঘ ৯ মাস যাবৎ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা দিয়ে আসছি; কিন্তু তাদের এধরনের আচরণ আমাদের খুবই মর্মাহত করে।
আমাদের পক্ষ থেকে যতটা সেবা দেওয়ার, আমরা দিয়েছি। তারা এখন চাইলে নিজ নিজ বাসায় গিয়েই বাকি চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন। তারপরও তারা হাসপাতালে আছেন, আমরাও আন্তরিকতার সাথে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
রাত সাড়ে ৯টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিষপান করে আসা জুলাই যোদ্ধা চারজনকেই মেডিসিন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। একটু আগেও খোঁজ নিয়েছি সবাই ঝুঁকিমুক্ত। সকালে দেখে রিলিজ দেওয়া হতে পারে।