সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫, ০৫:১৫:৩৫

রেহানা পা ধরলেও কবর দিতে বললেন শেখ হাসিনা!

রেহানা পা ধরলেও কবর দিতে বললেন শেখ হাসিনা!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে প্রসিকিউশনের দাখিল করা এক নথিতে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণ-অভ্যুত্থান এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রেক্ষাপট ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।

নথিতে বলা হয়, ৪ আগস্ট রাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ‘গ্যাং অব ফোর’ নামে পরিচিত চারজন শীর্ষ নেতা, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান এবং আসাদুজ্জামান খান কামালের পরামর্শে কঠোর অবস্থানে যায়। তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে নিরুৎসাহিত করে এবং সেনা-পুলিশ সমন্বয়ে আন্দোলন দমনের পরিকল্পনা নেয়।

৪ আগস্ট দুপুর থেকে ৫ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত গণভবনে চলা নানা বৈঠকে শেখ হাসিনা আন্দোলন দমন করতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে বলেন। নথিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীর প্রধানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, "যা হবার হবে, আমি ক্ষমতা ছাড়ব না।"

তিনি আন্দোলনকারীদের দমন করতে সেনাবাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিতে চান, তবে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়ার পরামর্শ দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাকে গুলি করে মেরে ফেলো, গণভবনে কবর দাও।”

ট্রাইবুনাল নথি অনুসারে, শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা পর্যন্ত পা ধরে অনুরোধ করেছিলেন পদত্যাগ করার জন্য, তবে তাতেও রাজি হননি তিনি। পরে সামরিক কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জয় মাকে পরিস্থিতি বোঝাতে সক্ষম হন এবং এরপরেই শেখ হাসিনা পদত্যাগে সম্মত হন।

শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন একটি বিদায়ী ভাষণ টেলিভিশনে প্রচার করতে, তবে সামরিক কর্মকর্তারা তা অনুমতি দেননি।

৫ আগস্ট দুপুরে শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র দেন এবং পরবর্তীতে ভারতে পাড়ি জমান। গণভবনে রুদ্ধদ্বার অবস্থায় কাটানো শেষ দুই দিনে তিনি যে কোনো মূল্যে আন্দোলন দমন করতে চেয়েছিলেন বলে নথিতে উল্লেখ রয়েছে।

ট্রাইবুনালের প্রসিকিউশনের ভাষ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত গণহত্যা চালিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেন। তার বিরুদ্ধে এমন তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে, যা বিশ্বের যেকোনো আদালতে দাখিল করা হলে তাকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে