এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : পবিত্র ঈদুল আজহার আগে মে মাসে বাংলাদেশে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। রোববার (০১ জুন) বাংলাদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, পুরো মে মাসে দেশে ২৯৭ কোটি বা ২.৯৭ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকার বেশি। প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, বর্তমানে দেশ থেকে অর্থপাচার বন্ধ হয়েছে। একইভাবে হুন্ডির দৌরাত্ম্যও কমেছে। তাছাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্সের দরও ভালো এবং নিরাপদ রয়েছে। এসব কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে অর্থপাচারে ঠেকাতে কড়াকড়ি করছে সরকার। আগের পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। অর্থপাচারে শীর্ষ সন্দেহভাজন শেখ হাসিনা পরিবার ও ১১ ব্যবসায়ী গ্রুপের বিষয়ে ১১টি যৌথ তদন্ত চলমান আছে।
এরই মধ্যে এসব ব্যক্তির ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি সংযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে বিশ্বব্যাপী ক*রো*নাভাই*রাসের প্রভাব শুরুর পর দেশে লকডাউনের মধ্যে রেমিট্যান্সে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রতি মাসে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) দেশে এসেছে মোট ২ হাজার ৭৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় (২ হাজার ১৩৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার) প্রায় ৬১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মে মাসে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার (২৯৭ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স দেশে এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি। এপ্রিল মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স ২২ কোটি ডলার বেশি এসেছে। রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।
বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মধ্যে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার এবং এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।