এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দেশে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিভিন্ন সুবিধা, মাসিক ভাতাসহ এলাকায় প্রভাব খাটাতেই বিভিন্ন পন্থায় বাগিয়ে নেওয়া হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সনদ।
বিগত সরকারের ১৫ বছরে নতুন নতুন তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়েছে। এসব ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা ও উৎসব ভাতায় সরকারের খরচ হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
১৯৯৪ সালে সরকার প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, সেসময় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার। ৩০ বছর পর এসে ২০২৪ সালে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কমার কথা ছিল। কারণ, এই সময়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যু বরণ করেছেন। তবে হয়েছে উল্টো।
২০২৪ সালে এসে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জনে। গত ৩০ বছরে প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার নতুন মুক্তিযোদ্ধা যুক্ত হয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে প্রায় ৯০ হাজারকে ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আর এসব ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধার পেছনে সরকারের বাৎসরিক খরচ ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
জামুকার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে সরকারি ভাতা প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তের সংখ্যা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন।
এই সংখ্যার মধ্যে ২৭১৯ জনের বয়সসীমা, গেজেট জালিয়াতি, সনদে অসঙ্গতি নিয়ে মামলা চলমান। এদিকে তালিকা থেকে ২ হাজার ১১১ জনের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হয়েছে। তাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্ধারিত বয়সসীমা (১২ বছর ৬ মাস) পূরণ হয়নি।
গত ১৫ বছরে মোট ৩ হাজার ৯২৬ জনের গেজেট বাতিল করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
বর্তমানে একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পান। এ ছাড়া ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় ১০ হাজার করে, স্বাধীনতা দিবসে ৫ হাজার এবং বাংলা নববর্ষে ২ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হয়। অর্থাৎ, একজন মুক্তিযোদ্ধা বছরে কমপক্ষে ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ভাতা পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্তরা আরও বেশি পরিমাণে ভাতা পান।
বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা ভাতার হিসাব:
* প্রতিমাসে ভাতা: ২০,০০০ টাকা
* দুই ঈদে: ১০,০০০ টাকা করে
* ২৬ মার্চ: ৫,০০০ টাকা
* বাংলা নববর্ষে: ২,০০০ টাকা
**সর্বনিম্ন বার্ষিক ভাতা: ২,৬৭,০০০ টাকা
এ ভাতার ভিত্তিতে, ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বছরে গড়ে নিচ্ছেন প্রায় ২,৪০০ কোটি টাকা। যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা পান আরও বেশি।