এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : জনগণের নানা ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবির বিষয়ে দলীয় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি না থাকায় জনগণ নানা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাই।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের(ইসির) সক্ষমতার বিষয়টিও জাতির সামনে পরিষ্কার হবে।’
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় বনানীর ‘শেরাটন ঢাকা’ হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা আশাকরি সরকার সকল রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র পাস’ করে তার ভিত্তিতে মৌলিক সংস্কার কার্যক্রম শেষ করবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধন করে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা জাতির সামনে পেশ করবেন। সেই ভোটার তালিকায় অবশ্যই প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের তালিকাভুক্ত করতে হবে। সরকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবেন।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জামায়াতপ্রধান বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘোষিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। আগামী বছর রোজার আগে বা পরে নির্বাচন হতে পারে। তবে সময় বেঁধে দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের নেই।’
তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোটার করার বিষয়ে আমরা অনেক আগে থেকেই কথা বলে আসছি। কিন্তু ইসির দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না, আমরা উদ্বিগ্ন।
ডা. শফিকুর বলেন, দেশের রাজনীতি, সমাজ ও সার্বভৌমত্বের ওপর কারও আধিপত্য আমরা মেনে নেবো না। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। সকল দেশের সঙ্গেই আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত দিনগুলোতে দফায় দফায় আমাদের উপর বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক ও অন্যায্য বোঝা চাপানো হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে গুম করে আয়নাঘরে বন্দী রেখে বছরের পর বছর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। দেশের আলেম ও সাংবাদিক সমাজও এর থেকে রেহাই পায়নি। সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এখনও বেদনাদায়ক হয়ে আছে।
জামায়াত আমির বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনের সকল শর্ত মেনে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধিত হয়েছিল। তারপরও সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অন্যায্যভাবে আদালতের ন্যায়ভ্রষ্ট রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়।
তিনি বলেন, গত ১ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সর্বসম্মত রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে অবৈধ এবং বাতিল ঘোষণা করে। একই সঙ্গে ২০১৩ সালের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন আদালত।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি অতিদ্রুতই অফিসিয়ালি আমাদের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাব। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, তারা যেন তাদের মর্যাদা রক্ষা করেন।
সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক, দুঃশাসন এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার নিজেদের অঙ্গীকারের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন জামায়াত আমির।-ইউএনবি