এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : টাকা পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারি বড় বড় পদ দখল করে রাখার বিস্তর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন বিদেশে গেলেন। রোববার সকালে একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন তিনি।
শেখ কবিরের দেশত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ডিআইজি (ইমিগ্রেশন) মোয়াজ্জেম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, রোববার সকালে একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের বাইরে গেছেন। তার বিদেশযাত্রায় কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল কি না জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, শারীরিকভাবে অক্ষম। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। এরপরও ক্ষমতার প্রভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২৩ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার শীর্ষপদে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন।
এসব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মধ্যে রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বিমা কোম্পানি, সেবা খাতের সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসোসিয়েশন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মিটিংয়েও নিয়মিত অংশ নিতে পারেননি তিনি। কিন্তু তার নাম ভাঙিয়ে এবং কখনো ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে সরকারি নানা সুবিধা পেয়েছেন বিভিন্ন ব্যক্তি। আবার কোনো কোম্পানি দখল করার পর তাকে সামনে রাখা হয়েছে।
৮২ বছর বয়সি শেখ কবির হোসেন শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো ভাই। সে হিসাবে শেখ হাসিনার চাচা। এছাড়াও গোপালগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি। এ পরিচয়েই তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে ছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন কোম্পানি, সংস্থা এবং গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন মিলিয়ে ২৩টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে ছিলেন শেখ কবির। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান, সরকারি ন্যাশনাল টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, কাবিকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কাবিকো ফুড লিমিটেড অ্যান্ড মাসুদা ডায়েরি নিউট্রিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বেস্ট হোল্ডিংয়ের (লা মেরিডিয়ান হোটেল) স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান, ইসলামী আই হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য, হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ফর দ্য লোকাল আন্ডার প্রিভিলেজড পিপলসের চেয়ারম্যান এবং খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।