বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫, ০৪:৩৫:৩৩

‘গায়ের চামড়া বাঁচাতে পারতাম কিন্তু আমি মানুষ হিসেবে মরে যেতাম’

‘গায়ের চামড়া বাঁচাতে পারতাম কিন্তু আমি মানুষ হিসেবে মরে যেতাম’

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, সবশেষ ২৪-এর ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে একটি আলোচিত নাম ছিল অধ্যাপক ড. সায়মা ফেরদৌস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের এই শিক্ষিক শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের প্রায় সবকটি আন্দোলনে অভিভাবকের ন্যায় পাশে ছিলেন সব সময়ই।

বিশেষ করে ২৪-এর দুর্বিষহ দিনগুলোতে আহত শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা থেকে শুরু করে গণমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে তার সাহসী আর বলিষ্ঠ প্রতিবাদ সেই সময় ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল।

সম্প্রতি বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে জুলাই-আগস্টের দুর্বিষহ সেই দিনগুলোর অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। 

সায়মা ফেরদৌস বলেন, একজন ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার, অলিগার্কদের কাছে আমার তো কিছু পাওয়ার ছিল না এবং কিছু চাওয়ারও নাই। ২০১৮ সাল, সেই সময়টা কিন্তু আরও বেশি কঠিন ছিল। সে সময় নির্বাচনের আগে যারাই প্রার্থী ছিলেন তাদেরকে বিনা মামলায়, মিথ্যা মামলায় আর গায়েবি মামলায় জেলে নিয়ে যাওয়া হত।

আয়নাঘরের নির্মমতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আয়নাঘরের বাস্তবতা আমি নিজে মাঠে দাঁড়িয়ে দেখেছি। কোর্টে একজন অ্যাটর্নি জেনারেল কীভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়। আমার চোখে চোখ রাখতে তিনি পারেন না। তখন তো আমি একজন সাধারণ মানুষ। সেই ২০১৮ সালে প্রতিবাদ করার নেগেটিভ সাইট-টা আমি সব সময়ই গৌরবের সঙ্গে বহন করি। 

কোটা, ব্যাট বা সড়ক আন্দোলনের সময় যখনই আমার সঙ্গে কোনো ছাত্রকে দেখা যেত তখন ওদেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হত। শুধু তাই না, তুলে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে মারা হত। বলা হতো, এটা তো বিএনপি ট্যাগ।

২৪-এর সময় ছাত্রদের সঙ্গে যেটা হলো সেটাকে মেনে নেওয়া আমার মনুষ্যত্বকে মেরে ফেলা হতো। ওই সময় আমি হয়ত আমার চাকরি বাঁচাতে পারতাম, গায়ের চামড়া বাঁচাতে পারতাম কিন্তু আমি মানুষ হিসেবে মরে যেতাম।

সায়মা ফেরদৌস বলেন, যে সময়টায় ছাত্রলীগের পেটুয়া বাহিনী শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারছিল। একটা মেয়ের রক্তাক্ত ছবি আপনারা দেখেছেন তখন। সেই ছবিটা যখন আমি দেখলাম, আমি এটা মানতে পারছিলাম না। সরকারি মহল থেকে তখন বলা হয়েছে, এদের জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। এটা কি একটা মগের মুল্লুক। তখন আমার মনে হয়েছিল প্ল্যাকার্ডটা নিয়ে একাই দাঁড়িয়ে যাই। ওই সময়টায় বাসায় ফিরলেই অস্বস্তি লাগতো বরং যতক্ষণ রাজপথে থাকতাম যতক্ষণই শান্তি লাগতো, প্রশান্তি পাইতাম। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে