রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫, ০৮:১৩:২২

কুমিল্লায় ওই নারীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি

কুমিল্লায় ওই নারীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : কুমিল্লার মুরাদনগরে ধ*র্ষ*ণের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল করার মূলহোতা রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী সুমন। এ ঘটনায় মূল আসামিসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

রোববার (২৯ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

জানা যায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে রোববার ভোর ৫টায় ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে অন্য চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—হান্নান মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান আলী, তালেব হোসেনের ছেলে মো. অনিক ও মো. আরিফ। তাদের সবার বাড়ি মুরাদনগর উপজেলায় বাহেরচর গ্রামে।

স্থানীয়রা জানান, ভুক্তভোগী ওই নারী (২৫) হিন্দু ধর্মাবলম্বী। প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন তিনি। বেশ কিছুদিন আগে ভুক্তভোগীর মা ফজর আলীর কাছে টাকা ধার চান। দিতে সম্মতি প্রকাশ করেন ফজর আলী। নিজের মোবাইলে টাকা না থাকায় মেয়ের মোবাইল থেকে ফোন দেন ভুক্তভোগীর মা। সেই সুবাদে ফজর আলী ওই নারীর ফোন নম্বর পেয়ে বেশ কয়েকবার কথা বলে সুসম্পর্ক তৈরি করেন। কথার রেশ ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে সুযোগ বুঝে ওই নারীর বাড়িতে যান ফজর আলী। বাড়ির পাশে পূজা হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়েছিলেন। ওই নারী তখন বাড়িতে একা ছিলেন।

আনুমানিক ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৮) ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে জোরে ধাক্কা দিলে দরজা খুলে যায়। ভেতরে প্রবেশ করে ফজর আলী তাকে ধ*র্ষ*ণ করেন। ঘরে প্রবেশের সময় ফজর আলীকে দেখে ফেলেন এক প্রতিবেশী। তিনি বিষয়টি জানাজানি করলে এলাকার লোকজন হাতেনাতে ফজর আলীকে ধরে গণপিটুনি দেন। ঠিক এ সময় একদল যুবককে সঙ্গে নিয়ে রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন ওই নারীকে বি*ব*স্ত্র করে ভিডিও ধারণসহ মারধর করতে থাকেন।

শনিবার রাতে এই ভিডিও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পেইজের মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়।
  
গ্রেপ্তারকৃতদের রাজনৈতিক পরিচয়
আটককৃত সুমন রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। তার নেতৃত্বে হিন্দু নারীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করা হয়। অন্য তিনজন ছাত্রলীগের সদস্য ও সুমনের সহযোগী। অন্যদিকে ধর্ষণ মামলার প্রধান অভিযুক্ত ফজর আলীর একটি ছবিতে একই আসনের সাবেক এমপি ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারের একটি মিছিলের অগ্রভাগে দেখা যায়। 

গত ৫ আগস্টের পর স্থানীয় বিএনপির সঙ্গে চলাফেরা করলেও বিএনপি নেতাদের ভাষ্য, তিনি তাদের লোক নন।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ফজর আলীর সঙ্গে আমার কোনো প্রেমের সম্পর্ক হয়নি। আমার নম্বর পেয়ে একাধিকবার ফোনে কথা বলেছেন তিনি (ফজর আলী)। এমন ঘটনায় আমি আমার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন মারাত্মক মর্মাহত। ভবিষ্যতে বড় ধরনের ঝামেলা এড়াতে আমরা বিষয়টি নিয়ে সামনে এগোতে চাই না।

এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করার পর পুলিশ অভিযানে নামে। ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মূল অভিযুক্তসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে