মঙ্গলবার, ০১ মার্চ, ২০১৬, ০২:৫৯:১১

সেই দুই শিশুর মৃত্যু চাইনিজ খেয়ে নয়, শ্বাসরোধ করে হত্যা!

সেই দুই শিশুর মৃত্যু চাইনিজ খেয়ে নয়, শ্বাসরোধ করে হত্যা!

নিউজ ডেস্ক : ঢাকার রামপুরায় খাবারের চাইনিজ খাবার খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর কথা পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হলেও তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হতে পারে বলে জানিয়েছন চিকিৎসকরা। ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণিপড়ুয়া ছাত্রী ইশরাত জাহান অরনি (১৪) ও তার ভাই আলভি আমিনের (৬) লাশের ময়নাতদন্তের পর গলায় জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

শিশু দুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে কি না- সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডা. প্রদীপ বিশ্বাস। তবে যে আলামতের কথা তিনি বলছেন, তাদের গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে তাদেরকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে। তাতে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে।

সোমবার রাত ৮টার দিকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেলে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ওরনি ও আলভি আমিন বাবা মায়ের সাথে রামপুরা বনশ্রীর বি-ব্লকের, ৪ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকে। বাবার নাম আমানুল্লাহ আমান। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের নয়াপাড়ায়।

তাদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেন, আমি সেভাবে বলব না।  তবে অক্সিজেনের অভবে তাদের মৃত্যু হয়েছে। খাবারের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন। এ কারণে তাদের পাকস্থলিতে যে খাবার পাওয়া গেছে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য।

সোমবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই শিশুদের মৃত ঘোষণা করেন। তাদের বাবা আমানুল্লাহ একজন পোশাক ব্যবসায়ী। মায়ের নাম মাহফুজা মালেক জেসমিন।  রামপুরা বনশ্রীর বি ব্লকের চার নম্বর রোডে তাদের বাসা।

শিশু দুটির খালা আফরোজা মিলা হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, রোববার রাতে একটি চায়নিজ রেস্তেরাঁয় খাওয়া দাওয়া করেছিলেন তারা। এরপর বাসায় ফিরে অরণী ও আলভী ঘুমিয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, সোমবার দুপুরে ওই চায়নিজ রেস্তোরাঁর খাবারের অবশিষ্টাংশ গরম করে খেয়েছিল তারা। এরপর ঘুমিয়ে পড়লে আর ঘুম থেকে ওঠেনি।

আমানুল্লাহর বন্ধু জাহিদ জানান, বিকালের পর অনেক ডাকাডাকির পরও বাচ্চাদের কোনো সাড়া না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন তাদের মা।  পরে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত্যুর কথা বলে দেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, ময়নাতদন্ত শেষে দুই শিশুর লাশ জামালপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে গ্রামের বাড়িতে তাদের দাফন করা হবে।

রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি। তবে ‘কেন্ট’ নামে বনশ্রীর যে রেস্তোরাঁর খাবার তারা খেয়েছিল, তার ব্যবস্থাপক, এক কর্মচারী ও পাচককে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় আটক করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
০১ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে