নিউজ ডেস্ক : প্রার্থীতা ফিরে পেতে কাদের সিদ্দিকীর আপিলের শুনানি বৃহস্পতিবার। এ দিন কাদের সিদ্দিকীর ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা।
স্থগিত হওয়া টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বৈধ নয় বলে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে কাদের সিদ্দিকীর করা লিভ টু আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত আগামী ৩ মার্চ বৃহস্পতিবার। আজ এ বিষয়ে কাদের সিদ্দিকীর করা আবেদনের শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।
পরে আদালত থেকে বেরিয়ে ব্যারিস্টার ড. মুহাম্মদ ইয়াসীন খান সাংবাদিকদরে বলেন, চেম্বার জজ আদালত কোনো আদেশ না দিয়ে আগামী ৩ মার্চ নিয়মিত ফুলকোর্টে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন।
আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ.জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ইলেকশন কমিশনের আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. মুহাম্মদ ইয়াসীন খান।
ব্যারিস্টার রাগিফ রউফ চৌধুরী বলেন, এর আগে হাইকোর্টের ঘোষণা করা রায় প্রকাশ করা হয় ২৩ তারিখ। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি লিভ টু আপিল করেন কাদের সিদ্দিকী।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কাদের সিদ্দিকীর করা রিট আবেদন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জাফর আহমেদ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে জারি করা রুলের নিষ্পত্তি করে রিট খারিজ করে রায় দেয়।
কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বৈধ নয় বলে নির্বাচন কমিশনের দেয়া সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে আদালত। এরপর আজ হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার বিচারপতির আদালতে আপিল (সিএমপি) আবেদন করেন কাদের সিদ্দিকী।
টাঙ্গাইল-৪ আসনে উপ-নির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন একটি ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা দিয়ে তা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের আদেশ দেন।
ঋণ খেলাপি দেখিয়ে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত বাতিল প্রশ্নে আদালত সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করে। ওই দিনই আদেশ পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিষয়টি নিয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে জানান।
কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ইসির পক্ষে গত বছর ২৬ অক্টোবর আবেদন দায়ের করেন অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড ব্যারিস্টার ড. মুহাম্মদ ইয়াসীন খান।
২৭ অক্টোবর টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচন স্থগিত করে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার কোর্ট। কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ইসির আবেদন বিষয়ে ২ নভেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হয়েছিল।
ওইদিন টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচন ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেছিল সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
এ সময়ের মধ্যে টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচনের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলেও আদেশ দেয়া হয়। সে অনুয়ায়ী রুলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) আসনে উপ-নির্বাচনে প্রার্থীতা বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে কাদের সিদ্দিকী গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। গত ১৩ অক্টোবর টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে ঋণ খেলাপির দায়ে কাদের সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে।
এরপর তারা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেন। ইসি তাদের উপস্থিতিতে শুনানি করে মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে।
সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী হজ, তাবলিগ জামাত বিষয়ে মন্তব্য করে বক্তব্য দেয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। লতিফ সিদ্দিকীর ওই মন্তব্য ও বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও ক্লিপ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সরকার লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। দল থেকে বহিস্কৃত হওয়ায় টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে লতিফ সিদ্দিকী গত বছর ১ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন। ফলে আসনটি শূন্য হয়। ওই আসনে তার ভাই
কাদের সিদ্দিকী প্রার্থিতা নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
১ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম