মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫, ০৮:৫০:৩১

বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় ২০ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা শিক্ষক মাহেরীন

বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় ২০ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা শিক্ষক মাহেরীন

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জীবন বাজি রেখে দগ্ধ ২০ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

স্বজনরা জানান, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে প্রতিদিনের মতো শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছিলেন মাহেরীন চৌধুরী। হঠাৎ করেই যুদ্ধবিমানটি ভবনে আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দগ্ধ শরীর নিয়েও তিনি ২০ শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

মাহেরীনের স্বামী মনছুর হেলাল বলেন, ‌‘শেষ রাতে হাসপাতালে ওর সঙ্গে আমার শেষ দেখা। আইসিইউতে শুয়ে শুয়ে ও আমার হাত নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরেছিল। বলেছিল, আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। আমি ওর হাত ধরতে গিয়েছিলাম কিন্তু শরীরটা এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে ঠিকভাবে ধরতেও পারিনি।’

মনসুর হেলাল বলেন, ‘ও অনেক ভালো মানুষ ছিল। ওর ভেতরে একটা মায়া ছিল সবাইকে ঘিরে। আগুন লাগার পর যখন অন্যরা দৌড়াচ্ছিল, ও তখন বাচ্চাদের বের করে আনছিল। কয়েকজনকে বের করার পর আবার ফিরে গিয়েছিল বাকি বাচ্চাদের জন্য। সেই ফেরাটা আর শেষ হয়নি। সেখানেই আটকে পড়ে। সেখানেই পুড়ে যায় আমার মাহেরীন।’

মাহেরীন চৌধুরীর বাবার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা বগুলাগাড়ী ইউনিয়নেরর চৌধুরী পাড়া গ্রামে। তিনি মহিতুর রহমান চৌধুরী ও সাবেরা খাতুন দম্পতির মেয়ে। তার স্বামী মনছুর হেলাল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।

সম্প্রতি নিজ দাদার প্রতিষ্ঠা করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন মাহেরীন চৌধুরী। দুর্ঘটনার আগের দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন তিনি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে