এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপুর মরদেহ তার বোনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে নিয়ে আসা হলে শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বাদ আসর সোহাগপুর ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। জানাজায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সর্বসাধারণ অংশ নেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাসুকা বেগম নিপু মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলা বিভাগের ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় তিনি শ্রেণিকক্ষে অবস্থান করছিলেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানেই রাত সোয়া ১২টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের পিতা সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমার কন্যার মৃত্যুতে পরিবার ভেঙে পড়েছে। আমি আর কিছু বলতে পারছি না। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই আমার মেয়ের জন্য।’
নিহতের বোনের মেয়ে ফাহমিদা খানম হৃদি বলেন, ‘খালামণি আমাদের খুব আদর করতেন, সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। তার মৃত্যুতে আমরা বাকরুদ্ধ।’
স্বজন খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার শালিকা অত্যন্ত বিনয়ী ও ভদ্র ছিলেন। হঠাৎ এমন মৃত্যু মেনে নেয়া কষ্টকর। মহান আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন।’
ভৈরব জিল্লুর রহমান সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবু হানিফা বলেন, ‘মাসুকা বেগম আমার প্রাক্তন ছাত্রী ছিলেন। অত্যন্ত বিনয়ী ও মেধাবী। আজ তার জানাজায় অংশ নিতে হবে, ভাবিনি কখনো।’
আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘এই দুর্ঘটনায় পুরো জাতি স্তব্ধ। দলের পক্ষ থেকেও নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
মাসুকা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিলোকুট চৌধুরী বাড়ির সন্তান। তবে তার বৃদ্ধ পিতা ও বড় বোন বর্তমানে আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে বসবাস করেন। পারিবারিক সিদ্ধান্ত ও তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।
ব্যক্তিগত জীবনে মাসুকা বেগম ছিলেন অবিবাহিত। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ।