এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : গাজীপুরের আলোচিত সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার নেপথ্য কারণ জানিয়েছে পুলিশ। হানি ট্র্যাপে ফেলে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভিডিও ধারণ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার নাজমুল করিম খান। এই হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলার চার্জশিট ১৫ দিনের মধ্যে দেওয়া সম্ভব হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন জিএমপি কমিশনার।
জিএমপি কমিশনার জানান, এই হত্যাকাণ্ডে আটজন সম্পৃক্ত। ইতোমধ্যে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামিদের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, প্রধান আসামি কেটু মিজান, যার নামে ১৫টি মামলা রয়েছে। কেটু মিজানের স্ত্রী পারুল আক্তার ওরফে গোলাপি, যিনি হানিট্র্যাপ কার্যক্রমে জড়িত। আল আমিন, যার নামে দুটি মামলা। স্বাধীন, যার নামে ২টি মামলা। শাহজালাল, যার বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে। ফয়সাল হাসান সাব্বির, যার বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে। এছাড়া আরেক আসামি আরমান পলাতক রয়েছেন, তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
জিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা আসামিদের গ্রেফতার করেছি, হত্যার অস্ত্র উদ্ধার করেছি, সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে এবং অধিকাংশ প্রমাণ আমাদের হাতে। এ সময় তিনি জানান, ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হবে।
এ সময় শিল্পনগরী গাজীপুরে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কারণও জানান জিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনের পর গাজীপুরের অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ায় অসংখ্য মানুষ বেকার হয়ে যায়। এতে গাজীপুরে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে।
অপরাধ বাড়ার আরেকটি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাজীপুরকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলা হয়ে থাকে, তাই দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যও এখানে নানা অপকর্ম চালানো হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় চান্দনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেটের সামনে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জিএমপি উপকমিশনার রবিউল হাসান বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা সবাই ছিনতাইসহ বিভিন্ন মামলার আসামি। তাদের রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
এদিকে সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেফতার আসামি মো. স্বাধীন। শনিবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টায় গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পে অবস্থিত সিপিএসসিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের এই তথ্য জানান র্যাব–১–এর কোম্পানি কমান্ডার এসপি কে এম এ মামুন খান চিশতী।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, চক্রের নারী সদস্য বাদশাহ নামে এক ব্যক্তিকে বিরক্ত করছিল, তাই বাদশাহ সেই নারীকে আঘাত করেন। এ ঘটনার পর চক্রের বাকি সদস্যরা বাদশাহ’র পেছনে ছুরি নিয়ে দৌড়াতে থাকে। বিষয়টি দেখে ভিডিও করছিলেন তুহিন। চক্রের সদস্যরা ভিডিও করা দেখে ফেলায় তার ওপর হামলা করে।
এসপি মামুন খান চিশতী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও আসামিদের স্বীকারোক্তি থেকে প্রাথমিকভাবে হত্যার এটাই কারণ পাওয়া গেছে। তদন্তে আরও ভালোভাবে বিষয়টি জানা যাবে।