সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ০২:২০:৩৩

পরিকল্পনা হয় নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহবাগ মোড় দখল করবে ও হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা হবে!

পরিকল্পনা হয় নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহবাগ মোড় দখল করবে ও হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা হবে!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : এবার অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতে সম্প্রতি রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে গেরিলা প্রশিক্ষণে অংশ নেন নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রশিক্ষণে আওয়ামী নেতাকর্মীরা পরিচয় গোপন রেখে বিশেষ কোড ব্যবহার করে অংশ নেন। 

প্রশিক্ষণে পরিকল্পনা হয় শেখ হাসিনা নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা লোকজন ঢাকা শহরে সমবেত করবে এবং শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। এরপর জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এ জন্য সভায় শপথ নেওয়া হয়।

ওই সভায় উপস্থিত সবাইকে প্রশিক্ষণ দেন মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন। ভাটারা থানার মামলায় গ্রেফতার চালক লীগের সভাপতি মিলন শিকদার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। রোববার (১০ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করা হলে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হন তিনি। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান মিলনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, সোবহান গোলন্দাজ নামের একজন আওয়ামী লীগ সমর্থক তাকে সেখানে নিয়ে যান। ওই সভায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ২০০ থেকে ৩০০ নেতাকর্মী সরাসরি এবং অনলাইনের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন। প্রশিক্ষণে হ্যান্ড মাইক হাতে তিনিই (সুমাইয়া জাফরিন) সবাইকে পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত বলেন।

জবানবন্দি শেষে মিলনকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে শনিবার উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেহাদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আটক মিলন সিকদার ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এর আগে এ মামলায় বুধবার মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন আদালতে হাজির করে ৭ দিন রিমান্ড চাইলে ৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত। ওইদিন শুনানিতে আদালতকে সুমাইয়া বলেন, আমার নামে দোষ চাপানো হচ্ছে। কনভেনশন হলে আগে থেকে সবকিছু এরেঞ্জ করা ছিল। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ওখানে গিয়েছিলাম। ওখানে কি ধরণের কাজ হচ্ছিল সে সম্পর্কে আমার জানা ছিল না।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের ঘটনায় কার কী ধরনের ভূমিকা ছিল, আরও কারা জড়িত ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও সুমাইয়া ইউনিলিভার বাংলাদেশের টেরিটরি ম্যানেজার হিসাবে টঙ্গী গাজীপুর শাখায় কর্মরত বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। সুমাইয়া ও তার স্বামী মেজর সাদেকুল হক পূর্বাচলে সি-সেল নামক রিসোর্টের কাটাবন রেস্টুরেন্টে এবং মিরপুর ডিওএইচএসে একাধিকবার রাষ্ট্রবিরোধী গোপন বৈঠকের আয়োজন করেন। এছাড়া উত্তরায় ১২ নম্বর সেক্টর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বিপরীতে প্রিয়াংকা সিটির দুই নম্বর গেটসংলগ্ন সুমাইয়ার একটি ফ্ল্যাটে একাধিকবার গোপন বৈঠক করেছেন।

এদিকে ১ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, ১৭ জুলাই অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাকে তার নিজ বাসস্থান রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়। ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পূর্ণ তদন্ত শেষ হওয়া সাপেক্ষে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ওই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করা হচ্ছে।

গত ১৩ জুলাই ভাটারা থানার এসআই জ্যোতির্ময় মণ্ডল সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায়, ৮ জুলাই একটি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তারা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।-যুগান্তর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে