এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর পাঁচটি ছাত্রী হলে আবাসন সংকট নিরসনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক উমামার আবেদনের প্রেক্ষিতে আপৎকালীন আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধ সহস্রাধিক ছাত্রী।
১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে পাঁচটি ছাত্রী হলের ৫৮৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য আপৎকালীন আর্থিক সহায়তা শুরু হয়। এই কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থী প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে সরাসরি তাদের একাউন্টে পাচ্ছেন।
অসচ্ছল ছাত্রীদের আপৎকালীন আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে গত জানুয়ারি মাসে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী’র নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অসচ্ছল ছাত্রীদের বিশেষ আপৎকালীন আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম চালু হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রভোস্ট ড. আব্দুল্লাহ -আল -মামুন, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানা, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আলেয়া বেগম, রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ছালমা নাছরীন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিসেস শিউলি আফসার এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি উমামা ফাতেমা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উমামা ফাতেমা বলেন, পাঁচই আগস্টের পর অনেক মেয়ে আবাসন সংকটে ভুগছিল এবং দেখা যাচ্ছিল যে অনেকের সেই আর্থিক অবস্থাটাও ছিল না যে তারা বাইরে বাসা ভাড়া করে থাকবে। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনও করেছে। পরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে অবহিত করি। তারা আমাদেরকে একটি আবেদনপত্র দিতে বলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। '
তবে উমামার অভিযোগ, ‘এখনও অনেকের আবাসন সংকট দূর হয়নি এবং সবাই আপৎকালীন আর্থিক সহায়তাও পাচ্ছে না।'
আপৎকালীন সহায়তার বিষয়ে ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন , এই সহায়তা একটি আপৎকালীন ব্যবস্থা। আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রায় ৫৩ ভাগই ছাত্রী। অথচ তাদের জন্য মাত্র ৫টি আবাসিক হল রয়েছে। অনেক ছাত্রী প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসে। ঢাকায় তাদের আত্মীয়-স্বজন থাকে না। শুরুতে টিউশনিও মেলে না। সব মিলিয়ে তাদের জন্য জীবন কঠিন। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তারপরও শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। এর অর্জন যেমন সমাজকে আনন্দ দেয় তেমনি সীমাবদ্ধতাও সমাজকে জানাতে হবে। বর্তমানে আমাদের ৫১ কোটি টাকার বাজেট ঘাটতি রয়েছে। সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা চাই, ভবিষ্যতে এই সহায়তা সকল শিক্ষার্থীর জন্য বিস্তৃত হোক। এজন্য আমি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনসহ সমাজের সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
ঢাবি ভিসি জানান, চীনের অর্থায়নে একটি নতুন ছাত্রী হল নির্মাণের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। যেখানে চারটি নতুন ছাত্রী হল ও পাঁচটি ছাত্র হল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন সংকট অনেকটাই দূর হবে।