নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর বনশ্রীতে ভাই-বোন অরনী ও আলভীকে হত্যার রহস্য বের হয়ে আসছে। পরকীয়া, অর্থ-সম্পত্তির লোভ, মানসিক অসুস্থতা এসব কারণেই নিজের দু’সন্তানকে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তাদের মা মাহফুজা মালেক জেসমিন।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল হাসান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এমনটাই জানিয়েছেন।
৩ মার্চ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস ব্রিফিংয়ে মাহফুজার বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে উদ্বেগ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় মাহফুজা। প্রাথমিকভাবে এটুকু জানা গেছে। বিস্তারিত তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
দুপুর ১টার দিকে র্যাবের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজাকে পুরোপুরি সুস্থ মনে হয়েছে। তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
সন্তানের লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণে দুই সন্তানকে হত্যা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য- এমন প্রশ্নে মুফতি মাহমুদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজা এ কথাই জানিয়েছেন। তদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানান তিনি।
মুফতী জানান, ঘটনার দিন বিকেল ৫টার দিকে মা জেসমিন আক্তার মেয়েকে নিজের ঘরে নিয়ে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করেন। মেয়ে অরনীর সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নিচে পড়ে যায়। এ সময় তিনি মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, পরে একইভাবে ছেলেকে হত্যা করেন তিনি। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি স্বামীকে ফোন করে বলেন, তাদের বিবাহবার্ষিকীর রয়ে যাওয়া খাবার খেয়ে ছেলেমেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তারা কেমন কেমন করছে।
মুফতী জানান, পরে স্বামী তার বন্ধুসহ লোকজনকে বাসায় পাঠায়। এর মধ্যে মাহফুজা সন্তান মৃত নিশ্চিত হয়েও তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীতে তাদের ডাক্তার মৃত ঘোষণা করলে মাহফুজা ময়নাতদন্ত করতে বাধা দেন। কারণ তিনি জানতেন, ময়নাতদন্তে তাদের শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে ছেলেমেয়ের শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের কারণে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হলেও র্যাব'র অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল হাসান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে বলেন, হত্যাকাণ্ডে মূলত মাহফুজা মালেক জেসমিনের পারিবারিক কলহ, মানসিক বৈকল্য, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক, অর্থ-সম্পত্তির লোভ প্রভৃতি।
৩ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম