নিউজ ডেস্ক : প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার ঘটে গেল এক বিরল ঘটনা। মানবিকতার হাত বাড়ালো ফায়ার সার্ভিস। সংকটময় মুহূর্তে গাছে আটকা পড়া একটি বিড়ালকে উদ্ধারে যন্ত্রপাতিসহ এগিয়ে আসেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
তিনদিন আগে কুকুরের তাড়া খেয়ে সচিবালয়ের একটি কৃষ্ণচূড়া গাছে উঠে পড়েছিল বিড়ালটি। এরপর আর নামতে পারেনি। নড়তে গেলেই গাছের উপরে বসে থাকা কাক চালাচ্ছিল যৌথ আক্রমণ।
তিনদিন না খেয়ে গাছেই জবুথবু হয়ে বসেছিল বিড়ালটি। ক্ ষুধা আর কাকের আক্রমণের শিকার বিড়ালটি সুযোগ বুঝে নামার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার ফায়ার সার্ভিসের অত্যাধুনিক যন্ত্রের সহায়তায় গাছের মগডাল থেকে বিড়ালটি উদ্ধার করা হয়।
গাছটি সচিবালয়ে চার নম্বর ভবনের সামনে পশ্চিম প্রান্তে। বিড়াল উদ্ধারের সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনের পশ্চিম প্রান্তে শত শত মানুষ ভিড় জমায়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রধান কার্যালয় থেকে অত্যাধুনিক উদ্ধার সরঞ্জাম নিয়ে আট সদস্যের দল আসে। বিশাল স্কাই লিফট দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিড়ালটিকে গাছ থেকে নামিয়ে আনেন।
প্রায় ৩০ মিনিট চেষ্টার পর বিড়ালটি নামিয়ে আনার পর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর জহিরুল ইসলাম বলেন, স্কাই লিফটের সাহায্যে আমরা বিড়ালটিকে উদ্ধার করেছি। এটি মাটি থেকে প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতায় গাছে ছিল। এ লিফটের মাধ্যমে সতের তলার সমান উচ্চতায় উদ্ধার কার্যক্রম চালানো যায়।
প্রত্যেকটি জীবন আমাদের কাছে মূল্যবান বলে জানান তিনি। এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে চিল উদ্ধার করেছি আমরা।
এদিকে বিড়ালটি শূন্য থেকে মাটি স্পর্শ করামাত্র উপস্থিত জনতা প্রাণ বাঁচানোর আনন্দে যেন আত্মহারা হয়ে পড়েন। সবার চোখে মুখে ফুটে ওঠে খুশির ঝিলিক। হাততালি দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের অভিনন্দন জানান তারা।
তবে এর পেছনে এক ব্যক্তির অবদান ভুলবার নয়। বিড়ালটি অনেকের নজরে এলেও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের খবর দিয়েছিলেন তিনিই। বিড়ালটি উদ্ধারের পর তার চোখে মুখে নিজের সন্তানকে বাঁচানোর যেন আনন্দ। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিড়ালটিকে চার নম্বর ভবনের পেছনের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবারের ব্যবস্থা করেন। তিনি হলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর গাড়িচালক মো. আজগর আলী।
তিনি বলেন, তিনদিন আগে বিড়ালটি গাছে উঠেছিল। আর নামতে পারেনি। কয়েকটা ছেলেকে বলেছি একটু নামিয়ে দিতে। কিন্তু কেউ দেয়নি। প্রতিদিন সকালে এসে আগে বিড়ালটা নেমেছে কিনা দেখতাম। এজন্য ফায়ার সার্ভিসকে ধন্যবাদ জানাই।
৩ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম