রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০১:৫৪:১৬

আবারও বাংলাদেশে ভূমিকম্প

আবারও বাংলাদেশে ভূমিকম্প

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সাত দিনের ব্যবধানে আবার বাংলাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার পর অনুভূত হওয়া এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের ছাতকে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪। এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসাম রাজ্যে এবং মাত্রা ছিল ৫.৯। 

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাইয়াত কবীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এটি একটি স্বল্প মাত্রার ভূমিকম্প হলেও এর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশের সিলেটের ছাতকেই। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি ঢাকা থেকে ১৮৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অনুভূত হয়।

গত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের গুয়াহাটি থেকে দূরে আসাম ভ্যালি এবং হিমালয়ের মাঝামাঝি। এটি মাঝারি থেকে ভারী মাত্রার ভূমিকম্প ছিল। তবে এবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশের ডাউকি ফল্ট (ডাউকি চ্যুতি) অঞ্চলে হওয়ায় এর ঝুঁকি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। 

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশের ভূমিকম্পের দুটি উৎস আছে—একটি উত্তরের দিকে এবং আরেকটি পূর্ব দিকে। এর মধ্যে উত্তরের ডাউকি ফল্ট বাংলাদেশের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। তাই আজকের স্বল্প মাত্রার ভূমিকম্প একটি সতর্ক সংকেত দিচ্ছে।

অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার জানান, আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ডাউকি ফল্ট এলাকায় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেও দুই থেকে তিনটি ৪ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। তিনি বলেন, এই এলাকাটি ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। 

ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, এই ডাউকি ফল্টে ১৭৮৭ সালের এক ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল। এরপর ১১০ বছর পর ১৮৯৭ সালে 'গ্রেট ইন্ডিয়া আর্থকোয়েক' নামে পরিচিত একটি ভূমিকম্পও এখানেই হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার জানান, সেই ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ছিল ৮.২। এর ফলে শুধু আসাম ও মেঘালয় নয়, ঢাকা শহরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং ঢাকায় পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন। ঐতিহাসিক তথ্যে আরও জানা যায়, সেই সময়ে ঢাকায় থাকা ইংরেজ কর্মকর্তারা ভূমিকম্পের পরের কয়েক মাস রমনায় তাঁবু করে থাকতেন এবং কেউ কেউ বুড়িগঙ্গায় বজরায় বাস করতেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে