শুক্রবার, ০৪ মার্চ, ২০১৬, ০৭:২০:১৩

নির্বাহী কমিটিতে জায়গা চান বিএনপির সবাই

নির্বাহী কমিটিতে জায়গা চান বিএনপির সবাই

মাহমুদ আজহার : ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির এক নেতা সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী এক নেতার সঙ্গে দেখা করতে তার বাসায় গিয়েছিলেন। এ সময় তিনি দাবি নিয়ে তাকে অনুরোধ করেন, এবার যেন নির্বাহী কমিটিতে তার জায়গা হয়।

আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির অনেক নেতার চেয়েও তার ভূমিকা বেশি ছিল বলে দাবি করেন ছাত্রদল নেতা। এ ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে সুপারিশের অনুরোধ জানান। যুবদলের আরেক নেতাকে দেখা যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক নেতার কার্যালয়ে। তারও একই অনুরোধ। যে কোনোভাবে বিএনপির নির্বাহী কমিটিতে জায়গা চাই।

ওই দুই নেতা জানালেন, প্রতিদিনই এ রকম অনেকেই তদ্বির নিয়ে আসেন। অনেক সময় বিরক্ত হয়ে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু কয়জনকে এ রকম করা যায়। শুধু ছাত্রদল-যুবদলের এই দুই নেতাই নন, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারাও নির্বাহী কমিটিতে ঠাঁই পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। অঙ্গসংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরাও বিএনপিতে যেতে আগ্রহী। শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বাসায় বাসায় দৌড়াচ্ছেন। এতদিন আন্দোলন-সংগ্রামে যেসব নেতা ছিলেন লাপাত্তা, তদ্বিরে তারাই এখন সামনের সারিতে।

নির্বাহী কমিটিতে যেতে আঞ্চলিক নেতারাও এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নোয়াখালী, বরিশাল, খুলনাসহ সর্বত্রই এখন এই প্রত্যাশা নেতাদের মনে। রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে আগামী ১৯ মার্চ কাউন্সিল করতে অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। জোর প্রস্তুতি চলছে কাউন্সিলের। কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত উপ-কমিটির নেতারা আজ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ সরেজমিন পরিদর্শনে যাবেন। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির সর্বশেষ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কাউন্সিলকে সামনে রেখে নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা ভাব দেখা গেছে। এটাকে ইতিবাচকভাবে দেখা উচিত। বিএনপির মতো একটি বড় দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। এটাকে নেতিবাচকভাবে দেখার সুযোগ নেই। সবারই প্রত্যাশা থাকে ভালো পদের। কিন্তু পদ তো সীমিত। কাউ না কাউকে ছাড় দিতেই হবে। আমরা আশা করছি, ১৯ মার্চ কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপির নতুন নেতৃত্বে দল আরও গতিশীল হবে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কাউন্সিল : রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে ১৯ মার্চ বিএনপি ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল করার অনুমতি পেয়েছে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্থান পাওয়ার কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় কাউন্সিলের জন্য তিনটি স্থান চেয়ে আবেদন করেছিলাম। বুধবার অনেক রাতে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন কর্তৃপক্ষ আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছে, তারা কাউন্সিলের জন্য আমাদের স্থান ব্যবহার করতে দেবেন।

কত টাকা ভাড়া তাও জানিয়েছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাউন্সিল করতে গণপূর্ত অধিদফতরে যে আবেদন বিএনপি করেছিল, তা এখন প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। ওই কর্তৃপক্ষও আমাদের অনুমতি দিয়েছিল। আমরা সেখানে যাব না। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনকে কেন্দ্র করে আমাদের কাউন্সিলের প্রস্তুতি শুরু করব।’

কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য পুলিশের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‘এটার নিয়ম হচ্ছে, পুলিশকে অবহিত করা। আমরা কাউন্সিলের বিষয়ে পুলিশকে আগে অবহিত করেছি, আবারও করব। নিয়ম হচ্ছে যে, সভা কিংবা কোনো অনুষ্ঠানের বিষয়ে মূল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া।’

জানুয়ারির শেষ দিকে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে বিএনপি। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র দলের অগ্রাধিকার থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি মেলেনি।

দুই উপ-কমিটির সভা : কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে গতকাল দুটি উপ-কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শৃঙ্খলা ও সেবা উপ-কমিটির বৈঠক হয় এর আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহের (অব.) সভাপতিত্বে। এরপর আপ্যায়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক আবদুস সালামের নেতৃত্বে আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুই প্রস্তুতি সভায় বিএনপির কাউন্সিল সূচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখা হয়। -বিডি প্রতিদিন
 
৪ মার্চ, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে