নিউজ ডেস্ক : সচিবালয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার করা সেই বিড়ালটি এখন মতিয়া চৌধুরীর মগবাজারের বাড়ির একটি কক্ষে। সচিবালয়ের কৃষ্ণচূড়া গাছের মগডাল থেকে বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা হয় বিড়ালটি।
কয়েকদিন আগে মতিয়া চৌধুরীর পোষা বিড়ালের একটি মারা যায়। সেই বিড়ালটির অভাবই দূর করেছে সাদার ওপরে লালচে ছোপের মায়াবি চেহারার এই বিড়ালটি।
সচিবালয়ের আনাচ কানাচে আর দশটি বিড়ালের মতোই ঘুরে বেড়াতো বিড়ালটি। সাপে-নেউলের মতো বিড়াল-কুকুরের অজানা দ্বন্দ্বে বিড়ালটি আশ্রয় নিয়েছিল সচিবালয়ে কৃষ্ণচূড়া গাছের মগডালে।
কিন্তু সেখানে যে তার জন্য অপেক্ষা করছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। গাছে ওঠার পর টের পেল বিড়ালটি। ওই গাছটিতে ছিল কাকের বাসা। বিড়ালটি দেখে আক্রমণ করতে থাকে কাকের দল। ঠিক যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা!
বিয়ষটি নজর এড়ায়নি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর গাড়িচালক আজগর আলীসহ কয়েকজনের। করুণ অবস্থা থেকে টাকা দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করার পাশাপাশি ভবনের জানালা দিয়েও উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। এভাবে অভুক্ত অবস্থায় গাছের মগডালেই বিড়ালটির কেটে যায় তিন তিনটি দিন।
বিষয়টি সহ্য করতে পারেননি আজগর আলী। তিনি আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে খবর দেন সচিবালয়ের ফায়ার সার্ভিসে। বিকেল পৌনে চারটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্কাই লিফট এনে উদ্ধার করেন বিড়ালটিকে।
কয়েকশ’ মানুষ তখন অবাক বিস্ময়ে দেখেছেন সে দৃশ্য। এ যেন মানবতার এক বিরল দৃষ্টান্ত।
আধা ঘণ্টার চেষ্টায় নামিয়ে আনা হয় বিড়ালটিকে। অভুক্ত থাকায় নড়ার শক্তি অনেকটাই হারিয়ে ফেলে অবলা প্রাণীটি। বিড়ালটিকে খাবার দেয়া হয়। কিন্তু আহত বিড়ালটির দায়িত্ব নেবে কে?
দায়িত্ব নিয়েছেন পশুপ্রেমী মতিয়া চৌধুরী। তার বাড়িতেই জায়গা হয়েছে বিড়ালটির। কৃষ্ণচূড়া গাছের বিড়ালটি এখন মতিয়া চৌধুরীর বাড়ির একটি কক্ষে।
যে গাছটিতে আশ্রয় নিয়েছিল বিড়ালটি সেটি সচিবালয়ে চার নম্বর ভবনের সামনে পশ্চিম প্রান্তে। বিড়ালটি শূন্য থেকে মাটি স্পর্শ করামাত্র উপস্থিত জনতা প্রাণ বাঁচানোর আনন্দে যেন আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন। সবার চোখে মুখে ফুটে ওঠেছিল খুশির ঝিলিক। হাততালি দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের অভিনন্দন জানান তারা।
৩ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম