মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৯:৩৭:৩৪

শেখ হাসিনা ও কামাল কি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন? যা জানা গেল

শেখ হাসিনা ও কামাল কি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন? যা জানা গেল

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন। সে অনুযায়ী আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কারণ এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইন সংশোধন করে নতুন বিধানটি যুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকার যোগ্য হবেন না। এছাড়া স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত হতে বা থাকতে পারবেন না। প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না। অন্য কোনো সরকারি পদেও অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না। তবে ট্রাইব্যুনালে কোনো ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে, সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করার পর অভিযোগ গঠন করে এখন সাক্ষীগ্রহণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এর ফলে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

এদিকে, মামলায় অভিযোগ দাখিল হলেই নির্বাচনে অযোগ্য করা যৌক্তিক হবে কি না- এ প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, কাউকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল হলেই হবে না। তা গ্রহণ হতে হবে। যখন গ্রহণ করলো তখন কগনিজেন্স (আমলে) নেওয়া হলো ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ১৯০ ধারা অনুযায়ী।

আপিল বিভাগের সাবেক এ বিচারপতির মতে, তদন্ত করার পরে যদি অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয় তবেই একজন আসামি হন। এর আগে তাকে আসামি বলা যাবে না। তবে সবচেয়ে ভালো হবে অভিযুক্ত হলেই তাকে অযোগ্য করা।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে প্রস্তাব তৈরির জন্য ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি কমিশন তাদের সুপারিশের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে। সেখানে আদালতঘোষিত ফেরারি আসামিদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার শুরু থেকেই প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিশেষ আইনে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণার সুপারিশ করা হয়।

এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পরে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) বিল, ২০১৩ ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। বিলের ১২ ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে দণ্ডিত হলে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য হবেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে