এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বেগবান হচ্ছে এবং দলটির ৩ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেও পুলিশ দিশেহারা বলে মন্তব্য করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ। শুক্রবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলের ‘ভয়েস বাংলা’ তে দেওয়া এক বিশ্লেষণে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ডিএমপি বলছে- গত ১০ মাসে ৩ হাজার আ. লীগের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেও আওয়ামী লীগকে থামানো যাচ্ছে না।
গতকাল এবং আজকেও ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের মিছিল হয়েছে। যেভাবে আগে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা মিছিল করত, ঠিক ওই ভাবেই আওয়ামী লীগ ঝটিকা মিছিল করছে। গলি থেকে বের হয়ে মেইন রোডে ওঠেই তারা উধাও হয়ে যাচ্ছে। এভাবে ঝটিকা মিছিল থেকে একদিন মিছিল, তারপরে গণমিছিল, এরপরে আরো বড় মিছিলেও হয়তো রুপ নেবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে।
সরকারের ভেতরে দূর্বলতা যত বাড়বে, আওয়ামী বিরোধীদের মধ্যে অনৈক্য যত বাড়বে; তত বেশি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম জোরদার হবে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় দিক হলো- আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বড় হচ্ছে। তার মানে সরকারের জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে; আওয়ামী বিরোধী শক্তিগুলোর গ্রহণযোগ্যতা কমে যাচ্ছে; এর ফলেই হয়তো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন মরিয়া হয়েছে। হয়তো তাদের মিছিলের আহ্বানে অনেকেই সাড়া দিচ্ছে।
তারা মনে করছে, গণঅভ্যুত্থান যেভাবে সফল হয়েছে, এভাবে মিছিল করতে করতে হয়তো ৬ মাস পর পরিস্থিতি পালটে যাবে এবং তাদের নেত্রী ফিরে আসবেন। সেই সম্ভাবনা থেকেই হয়তো তারা মিছিলগুলো করছে।
তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি এর একটা ভিত্তি আছে। কারণ এই মুহুর্তে আওয়ামী বিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই, বিরোধীতা চরমে, মুখোমুখি অবস্থা। অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
চাঁদাবাজি-রাহাজানি বেড়েছে। এই কারণে সবার ভেতরে একধরনের মনোভাব জন্মেছে যে, তাহলে তো আওয়ামী লীগের আমলই ভালো ছিল। আওয়ামী লীগের একচেটিয়া শাসনামলে তাও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ছিল, এখন তো কোনো কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ নেই। এই ধরনের চিন্তা বাড়ছে। ফলে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, শেখ হাসিনা সর্বশেষ যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটাকে ফেলে দেওয়া যাবে না। তাদেরকে যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়, তাদের অনেকেই মনে করেন তারা সরকার গঠন করার মতো অনেকগুলো আসন পাবেন। আর যদি সরকার গঠন করতে নাও পারে তবে শক্তিশালী বিরোধিদল হিসেবে আবির্ভূত হবে।
তিনি বলেন, এখন অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াত হয়তো সেই ঝুকিটা নেবে না। সেই ঝুকি যদি নিতো তাহলে তারা দেখতে পারতো তাদের জনপ্রিয়তার পারদ এক বছরের মধ্যে নিচের দিকে নেমে আসছে। এটা আওয়ামী বিরোধি রাজনীতির শোচনীয় ব্যর্থতা। মানুষ হতাশ। মানুষ সামনের নির্বাচন নিয়ে সন্দিহান। নির্বাচন হবে কিনা, নির্বাচন হলেও ভালো কিছু হবে কিনা এসব নিয়ে। এই মুহুর্তে মানুষের মনোভাব সরকারবিরুদ্ধ। এরকম পরিস্থিতিতে পতিত স্বৈরাচারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে।