এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : টমেটো সংকটে বিপর্যস্ত হওয়ার পর এবার পাকিস্তানে পেঁয়াজের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতারা চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১১০ রুপি থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ২২০ রুপি পর্যন্ত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানায়।
এর আগে টমেটো রেকর্ড দাম ৬০০ থেকে ৭০০ রুপিতে বিক্রি হয়েছিল। পরে অবশ্য কমে ২০০ রুপিতে নেমে আসে। তবে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। দেশটিতে চাহিদা ও সরবরাহের ব্যাপক ব্যবধানের কারণে আগামী দিনগুলোতেও পেঁয়াজের দাম চড়া থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফালাহি আঞ্জুমান পাইকারি সবজি বাজার সুপার হাইওয়ের সভাপতি হাজী শাহজাহান জানিয়েছেন, সিন্ধু থেকে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ শুরু হলেছে, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সরবরাহ কিছুটা বাড়তে পারে, ততদিনে দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, কিছু পেঁয়াজ ইরান থেকে এলেও প্রতিবেশী দেশে দাম বেশি এবং সীমান্ত ছাড়পত্রে জটিলতার কারণে আমদানি সীমিত।
পেঁয়াজের এই সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ হলো আফগানিস্তান থেকে আমদানি বন্ধ থাকা। সীমান্তে সংঘর্ষের জেরে গত দুই সপ্তাহ ধরে পাক-আফগান বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। ফলে পাইকারি বাজারগুলো সিন্ধু অঞ্চলের স্বল্প সরবরাহ এবং সীমিত আমদানির কারণে পেঁয়াজের তীব্র ঘাটতির সম্মুখীন। বর্তমানে পাইকারি বাজারে এক মন পেঁয়াজের দাম ৬ হাজার থেকে ৬ হাজার ৫০০ রুপিতে পৌঁছেছে। কয়েক দিন আগেও যা ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছিল।
অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে পেঁয়াজ রপ্তানিও স্থগিত করা হয়েছে। করাচি কমিশনারের জারি করা পেঁয়াজের সরকারি খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ১০৪ রুপি হলেও বাস্তবে তা ২০০ থেকে ২২০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাঞ্জাবের বিভিন্ন শহরেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, যেখানে ১০৫ কেজির একটি বস্তা এখন ২৩ হাজার রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, পেঁয়াজের উৎপাদন গত বছর থেকে ১৬ শতাংশ বেড়েছিল, তবুও সরবরাহ ঘাটতি ও আমদানি সমস্যার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে।