এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া ভূ-কম্পন এবং ঝুঁকি পর্যালোচনা করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আগাম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার থেকে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় দুই দিনের ব্যবধানে চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী ও একটি ঢাকায় ছিল।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে একটি এবং শনিবার (২২ নভেম্বর) দিনের বিভিন্ন সময়ে তিনটি ভূমিকম্প হয়, যার ফলে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। ভূপৃষ্ঠ থেকে উৎপত্তিস্থলের গভীরতা যত কম হবে, তত বেশি ঝাঁকুনি হবে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎস ছিল নরসিংদীর মাধবদী। উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। এদিনের ভূকম্পনের তীব্রতা ছিল স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তীব্র ঝাঁকুনিতে কেপে ওঠে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। এ ভূমিকম্পের ঘটনায় শিশুসহ ১০ জন নিহত হন। আহত হন ৬ শতাধিক মানুষ।
এসব ঘটনায় নিরাপত্তার জন্য গ্যাস কূপ খনন ও ভূতাত্ত্বিক জরিপ কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এ অবস্থায় ভূমিকম্প চলাকালীন আতঙ্কিত না হতে কিছু পরামর্শ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
রোববার (২৩ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মিডিয়া শাখা থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় ভূমিকম্প চলাকালে নিচের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়
১. ভূকম্পন অনুভূত হলে আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত ও স্থির থাকুন। ভবনের নিচতলায় থাকলে দ্রুত বাইরে বেরিয়ে খোলা জায়গায় আশ্রয় নিন।
২. বহুতল ভবনে থাকলে Drop-Cover-Hold পদ্ধতি অনুসরণ করুন– নিচু হোন, শক্ত টেবিল/ডেস্কের নিচে ঢুকে খুঁটি শক্ত করে ধরুন। অথবা কলামের পাশে, বিমের নিচে আশ্রয় নিন। সম্ভব হলে বালিশ, কুশন বা এ জাতীয় বস্তু দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন।
৩. ভূমিকম্প চলাকালীন লিফট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ভূমিকম্প থামার সঙ্গে সঙ্গে বৈদ্যুতিক ও গ্যাস সংযোগ দ্রুত বন্ধ করুন।
৪. বারান্দা, বেলকনি, জানালা, বুকশেলফ, আলমিরা, কাঠের আসবাবপত্র বা কোনো ঝুলন্ত ভারী বস্তু থেকে দূরে থাকুন। হাতের কাছে টর্চ, হেলমেট, জরুরি ওষুধ এবং বাঁশি সংরক্ষণ করুন, যাতে প্রয়োজন হলে ব্যবহার করা যায়।
৫. ঘরের বাইরে থাকলে গাছ, উঁচু ভবন, বৈদ্যুতিক খুঁটি ইত্যাদি থেকে দূরে খোলা স্থানে আশ্রয় নিন।
৬. গাড়িতে থাকলে ওভারব্রিজ, ফ্লাইওভার, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে দূরে গাড়ি থামান। ভূকম্পন না থামা পর্যন্ত গাড়ির ভেতরেই থাকুন।
৭. একটি ভূমিকম্পের পর আবারও ভূকম্পন হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবন, ব্রিজ ও বিভিন্ন অবকাঠামো থেকে দূরে থাকুন। কারণ, পরবর্তী ভূমিকম্পে সেগুলো পুনরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রাণহানি ঘটাতে পারে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মতে সবার সম্মিলিত চেষ্টা ও সচেতনতায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখা সম্ভব। জরুরি সেবার প্রয়োজনে হটলাইন নম্বর: ১০২ এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।