এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশে দলিল রেজিস্ট্রেশনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। ভূমি মালিকদের হয়রানি কমানো, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, ঘুষ বন্ধ করা ও প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতেই নতুন নিয়ম কার্যকর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভূমি সচিব সালেহ আহমেদ।
ঢাকায় ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন।
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে নতুন ব্যবস্থা
দীর্ঘদিন ধরে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে দলিল লিখনকারীদের (মহুরী) দালালচক্র, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মূল দলিল হাতে পেতে বিলম্ব—এসব সমস্যা ভূমি মালিকদের নিত্যদিনের দুর্ভোগ ছিল।
নতুন নিয়ম কার্যকর হলে:
# মহুরী বা দালালচক্র অতিরিক্ত অর্থ নিতে পারবে না
# মূল দলিল কাউন্টার থেকে সরাসরি পাওয়া যাবে
# সার্টিফাইড কপি বা নকল তুলতেও আর অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা যাবে না
প্রবাস থেকে বসেই দলিল রেজিস্ট্রি—সশরীরে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা নেই
এবার প্রথমবারের মতো দলিল রেজিস্ট্রেশনে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার চালু করা হচ্ছে।
এর ফলে:
# বিক্রেতা দেশের বাইরে থাকলেও অনলাইনে পরিচয় নিশ্চিত করে দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারবেন
তিনি প্রকৃত মালিক, স্বেচ্ছায় দলিল করছেন এবং টাকা পেয়েছেন—এসব বিষয় ডিজিটাল মাধ্যমে সাব রেজিস্ট্রারকে নিশ্চিত করতে পারবেন
ফলে প্রবাসী ও দূরে থাকা মালিকদের আর দেশে ছুটে আসতে হবে না
ক্রেতার জন্য আলাদা কলাম—ব্যক্তিগত নম্বর যুক্ত হবে দলিলে
দলিলে নতুন করে ক্রেতার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
এর উদ্দেশ্য:
# সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সরাসরি ক্রেতাকে মূল দলিল সংগ্রহের তারিখসহ প্রয়োজনীয় তথ্য জানাতে পারবে
# মহুরীদের পেছনে দৌড়াতে হবে না
# দলিল হারালে বা নকল প্রয়োজন হলে ক্রেতা নির্দিষ্ট যোগাযোগ নম্বরের মাধ্যমে তথ্য জানতে পারবেন
হয়রানি কমাতে যোগাযোগ নম্বর ও স্লিপ প্রদান
দলিল রেজিস্ট্রেশনের দিন ক্রেতাকে একটি টোকেন/স্লিপ দেওয়া হবে, যেখানে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের নির্দিষ্ট ব্যক্তির যোগাযোগ নম্বর দেয়া থাকবে। এর মাধ্যমে ক্রেতা যেকোনো সময় দলিল-সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারবেন।
হয়রানি শূন্যের কোঠায় নামানোই লক্ষ্য
ভূমি সচিব জানিয়েছেন, নতুন ডিজিটাল ব্যবস্থা কার্যকর হলে দলিল রেজিস্ট্রেশনে হয়রানি প্রায় শূন্যে নেমে আসবে।
তিনি বলেন, “২০২৬ সাল থেকে নতুন তিনটি নিয়ম চালু হচ্ছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে দলিল রেজিস্ট্রেশন পুরোপুরি স্বচ্ছ, ঘুষমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত হবে।”