বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০১:৩৯:১৬

কড়াইল বস্তির আগুনে কতগুলো ঘর-বাড়ি পুড়েছে জানালো ফায়ার সার্ভিস

কড়াইল বস্তির আগুনে কতগুলো ঘর-বাড়ি পুড়েছে জানালো ফায়ার সার্ভিস

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে রাজধানীর কড়াইল বস্তির আগুন। আগুনে বস্তির প্রায় ১৫০০ ঘর-বাড়ি পুড়েছে। আগুনে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো তথ্য নেই ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের কাছে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেন্টেনেন্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, বস্তিতে বিভিন্নভাবে কথা বলে আমরা জনাতে পেরেছি আনুমানিক ১৫০০ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে তদন্তে জানা যাবে আসলে কয়টি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগুন লাগার ৩৫ মিনিট পর ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় তিনটি স্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট। কারণ সড়কে অনেক যানজট ছিল। এরপরে আরও ইউনিট এলেও বড় গাড়িগুলো ঢুকতে পারেনি সরু রাস্তার কারণে। অনেক সীমাবদ্ধতার কারণে কাজ করতে হয়েছে। তবে এখানে পৌঁছানোর আগেই আগুন ডেভলপ স্টেজে চলে যায়। এ কারণে একটু সময় লেগেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে।

লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, প্রথমেই আমাদের খুবই বেগ পেতে হয়েছে আগুনের সোর্সের কাছে পৌঁছাতে। ফায়ার ফাইটাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করে দ্রুত আগুন আটকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।

ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে ৩৫ মিনিট সময় লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যানজট এর অন্যতম কারণ। বিকেলের দিকে যানজট বেশি ছিল। এজন্য তিন-চারটি স্টেশন থেকে ইউনিটগুলো মুভ করানো হয়। এখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসার পরেও গাড়িগুলো ঢুকতে পারেনি। এ কারণে দূর থেকে পাইপ টেনে কাজ করতে হয়েছে।

আগুনের সোর্স সম্পর্কে তিনি বলেন, আগুন নেভানোর কাজ করার সময় দেখা গেছে, যত্রতত্র বিদ্যুতের তার রয়েছে, প্রত্যেক বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। আগুনের সোর্স তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।

এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে ছোটখাটো আহত হয়তো কেউ হতে পারে। পরে জানা যাবে।

কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এ সম্পর্কে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি সবগুলো বিষয় তদন্তের পর জানা যাবে।

প্রতিবছর কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগে, ফায়ার সার্ভিসের কোনো উদ্যোগ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতি বছর কড়াইল বস্তিতে মহড়া করা হয়। মহড়ায় দুর্বল পয়েন্টগুলো নির্ধারণ করা হয় এবং আগুন লাগলে সে অনুযায়ী কাজ করা হয়। কোন পদ্ধতিতে ফায়ার ফাইটিং করতে হবে এসব মহড়ায় উঠে আসে। কিছুদিন আগেই এখানে মহড়া শেষ হয়েছে, এজন্য আগুন দ্রুত নেভানো গেছে; অন্যথায় আগুন নেভাতে হয়তো আরও দুই-তিন ঘণ্টা বেশি সময় লাগতো।

পানির স্বল্পতা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত পানির সাপোর্ট আমরা পেয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি, ওয়াসা এবং ড্রেন থেকেও পানি নেওয়া হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, সামনে শীত আসছে, আগামী দুই মাস আমাদের ভাষায় আগুনের সিজন বলা হয়। অন্য সিজনের চেয়ে এই সিজনের আগুনের ঘটনা বেশি দেখতে পায়।

স্থানীয়রা দাবি করেছেন হেলিকপ্টার দিয়ে আগুন নেভালে দ্রুত নেভানো যেত। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হেলিকপ্টার যখন উড়ে তখন বাতাসের জন্য আগুন আরও বেশি ছড়িয়ে যায়। এখানে হেলিকপ্টার দিয়ে নেভানোর মতো আগুন নয়।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ২২ মিনিটের দিকে কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নেভাতে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরও ৮টি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে