এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন গৃহকর্মী ‘আয়েশাকে’ শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতিমধ্যে তার প্রকৃত নাম-পরিচয় ও তার স্বামীর নামও জানতে পেরেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত ওই গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ওই তরুণীকে শনাক্ত ও নাম-পরিচয় বের করা হলেও তদন্তের স্বার্থে তাকে গ্রেপ্তারের পর তা প্রকাশ করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যার কারণ জানা যাবে।
গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তাদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে।
ভবনের ভেতরে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন।
চারদিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন ওই তরুণী।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গৃহকর্মী তার প্রকৃত নাম ও ঠিকানা দেননি। তাকে কেউ চিনতেও পারছিলেন না।
ঘটনার সময় তার সঙ্গে কোনো মোবাইল ফোনও ছিল না। বাসা থেকে তিনি যে ফোন নিয়ে গেছেন, সেটাও বের হয়েই বন্ধ করে দিয়েছেন। আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল না থাকায় ওই বাড়ির গেট থেকে বের হয়ে রিকশা নিয়ে কোনদিকে গেছেন, তা নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে ওই তরুণীর চারদিনের মধ্যে মোবাইল ফোনে কোনো যোগাযোগ ছিল না। সব সময় বোরকা পরে থাকায় ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায়ও তার মুখ স্পষ্টভাবে ধরা পড়েনি।
ফলে তাকে শনাক্তে ম্যানুয়ালি কাজ করতে হয়। সম্ভাব্য সব ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করে তাকে শনাক্ত করা হয়।
এর আগে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান একটি গণমাধ্যমকে জানান, গৃহকর্মীর নাম-ঠিকানা ও কোনো মোবাইল ফোন না থাকায় পরিচয় জানা যাচ্ছে না। দ্রুতই তাকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন আজিজুল। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজে দেখেছেন, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তার (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মুঠোফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যান। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে- অজ্ঞাত কারণে আসামি তার (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান বলেন, ‘গৃহকর্মীর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে, তদন্ত চলমান।’