বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৭:০৭

দেশ ছাড়ার আগে বাবা-মাকে যে শেষ কথা বলে যান শ্যুটার ফয়সাল

দেশ ছাড়ার আগে বাবা-মাকে যে শেষ কথা বলে যান শ্যুটার ফয়সাল

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলার মূল আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম ঢাকার আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা জানান, ছেলে ফয়সালের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল না। যোগাযোগ ছিল কম। ছেলে সাধারণত অন্য জায়গায় থাকত। আর তারা মেয়ের বাসায় থাকতেন। তবে ঘটনার দিন ফয়সাল তাদের বলে যান, তিনি বাংলাদেশ থেকে চলে যাচ্ছেন।

জবানবন্দিতে ফয়সালের মা-বাবা বলেছেন, ফয়সাল ঘটনার দিন ১২ ডিসেম্বর সকাল থেকে কোনো মোবাইল ব্যবহার করেননি। ঘটনার আগের রাতেই হাদির পরবর্তী দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে জানত।

ফয়সাল তিনটি বিয়ে করেছেন এবং একজন বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। ডেফোডিলে পড়ার সময় থেকেই রাজনীতিতে জড়িত। বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের অনেকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। তারা আরো জানান, ঘটনার দিন হাদিকে শ্যুট করে ফয়সাল শেরেবাংলা নগরে তার বোনের বাসায় যায়।

ওই বাসায় তার বাবা-মা এবং বোন ছিলেন। সেখানে গিয়ে ফয়সাল হুন্ডার মোটরসাইকেলের নাম্বার প্লেট পরিবর্তন ও আলামত ধ্বংস করে। এরপর সে সিএনজি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। তার বাবাই সমস্ত ব্যবস্থা ঠিক করে দেন। ফয়সাল বের হওয়ার সময় বলেছে, সে বাংলাদেশ থেকে চলে যাচ্ছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর ফয়সাল মা-বাবাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, গতকাল ফয়সালকে গাড়ি ভাড়া দিয়ে পালাতে সহযোগিতা করায় গ্রেপ্তার মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম শুনানি শেষে তার রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া একইদিন ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার আব্দুল হান্নানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার সূত্রে জানা জানা গেছে, গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা-৮ আসনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন প্রচারণায় অংশ নেন শরিফ ওসমান হাদি। ওইদিন মতিঝিলে জুমার নামাজ পড়ে নির্বাচনি প্রচারণা শেষ করেন তিনি। এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে ওইদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে হাদিকে বহনকারী অটোরিকশা পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতিকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার পাঠানো হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে