এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ছোট এলাকা খাসমহলে জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির বেড়ে ওঠা। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থেকে দেশজুড়ে পরিচিত মুখ ওঠে তিনি। একইসঙ্গে হয়ে ওঠেন জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
তবে অসময়ে তার চলে যাওয়া যেন মেনে নিতে পারছেন না এলাকারা বাসিন্দারা। তাই হাদির বিদায়ের দিনে একযোগে দোকানসহ বিভিন্ন স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রেখে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এলাকার ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় শরীফ ওসমান হাদির স্মরণে নলছিটির সব দোকান একযোগে বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলা ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে দোকানসহ এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা মেনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এ বিষয়ে নলছিটি উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে সকালে শহরে মাইকিং করা হয়।
নলছিটি পৌর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নেওয়াজ হোসাইন বলেন, নলছিটি উপজেলাবাসীর পক্ষে সব ব্যবসায়ীরা শরীফ ওসমান হাদির সম্মানে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। জাতীয় বীর শরীফ ওসমান হাদির পরিচিতি ও সুখ্যাতি এখন শুধু নলছিটির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে।
ব্যবসায়ী শাহাদাত ফকির ও রফিকুল ইসলাম বলেন, শরিফ ওসমান হাদি একজন জাতীয় বীর। সারা দেশবাসী আজ তার জন্য কাঁদছে। এমন একজন মানুষকে আমরা নলছিটিবাসী হারিয়েছি। এই শোক সইবার মতো নয়। আমরা তার নামাজে জানাজায়ও অংশ নিতে পারিনি। তাই তার প্রতি সম্মান রেখে আমরা অর্ধবেলা আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ব্যবসায়িক কার্যক্রম থেকে নিজেদের বিরত রেখেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা জিয়াউল কবির মিঠু বলেন, অনেক আশায় ছিলাম আমাদের সূর্যসন্তানকে নলছিটি জানাজা ও দাফন করা হবে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা আর হয়ে উঠেনি। তার নামাজে জানাজায় অংশ নিতে পারলাম না। তাকে একনজর শেষ দেখাও দেখতে পেলাম না। নলছিটির ব্যবসায়ীদের অনেক ধন্যবাদ যে, আজকে তারা ওসমান হাদির সম্মানে অর্ধবেলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন।
এর আগে শনিবার দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে শহীদ ওসমান হাদির জানাজা শুরু হয়। জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধানরাও। এছাড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলের নেতারাও জানাজায় অংশ নেন।
শহীদ ওসমান হাদির জানাজা ঘিরে সকাল থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এসে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জানাজায় অংশ নেন লাখো মানুষ। পরে দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই তাকে দাফন করা হয়।