এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘মাতৃস্নেহের’ কথা স্মরণ করলেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আবেগঘন কণ্ঠে তিনি ব্যক্তি খালেদা জিয়াকে স্মরণ করেন।
ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ৪০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর এদিন ভোর ৬টায় মারা যান তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানিয়ে বিফ্রিং করতেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন, আমরা যারা ওনার সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে মেশার সুযোগ হয়েছে। আমরা দেখেছি, উনি একদিকে যেমন সত্যি সত্যি অভিভাবক, আরেক দিকে মাতৃস্নেহে উনি আমাদেরকে দেখতেন। কোনোদিন বাসায় যাওয়ার পরে কোনো কিছু না খেয়ে বাসা থেকে কেউ যেতে পারতো না।
জাহিদ হোসেন বলেন, ডাক্তারদের কি খাইয়েছেন? এগুলো সবসময় ওনার যারা কাজের সহকর্মী ছিলেন, সহায়তা করতেন, তাদের জিজ্ঞাসা করতেন। উনি বলে দিতেন, আজকে এটা দিবা।
তিনি বলেন, কোনো দিন (চিকিৎসক) যেতে একটু দেরি হলে জিজ্ঞাসা করতেন, এত দেরি কেন হল? আমি তো বসে আছি। অর্থাৎ চিকিৎসকরা কখন যাবেন, উনি যখন বাসায় থাকতেন, তখন প্রত্যেক দিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার বাসায় যেতেন। উনি সবার সাথে কথা বলতেন।
ডা. জাহিদ বলেন, কাজেই আমি আজকে এইদিনে বলব, চলেন, আমরা সবাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে, ওনাকে বেহেস্ত নসিব করুন, সেই দোয়া করি। জাতীয়তাবাদী দলের সকল নেতাকর্মীকে এই শোক সহ্য করার এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে এই কষ্ট সহ্য করে দায়িত্ব পালন করার আল্লাহ তওফিক দিন।
আপনার সঙ্গে কবে শেষ কথা হয়েছিল? জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, পহেলা ডিসেম্বরে তার ডায়ালাইসিস শুরু করা হয়েছে, তারপরে ইলেকটিভ ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়েছে। তারপরেও ওনার সাথে আমাদের (চিকিৎসকদের) কথা হয়েছে। বা আমরা যখন ওনাকে দেখেছি, উনি আমাদের কথার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং সাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
কাজেই রোগী হিসাবে, উনি যেহেতু অসুস্থ, আমরা সবসময় ওনার সাথে কথা বলা ঠিক না, শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে, কোনো অবস্থাতেই ওনার রোগ বেড়ে যাক, এই ধরনের কোনো আচরণ কোনো চিকিৎসক করেন না। কাজেই কবে কথা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে এখন বলার মতো আমার মানসিক অবস্থা এই মুহূর্তে নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, উনি সবসময়, আমরা যখন দেখতে যেতাম সাড়া দিচ্ছিলেন। ওনাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হত বা কথা বলার জন্য বলা হত অথবা ওনাকে প্রশ্ন করা হত, প্রত্যেকটিরই উনি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সাত দিনের শোক ঘোষণা করেছে দলটি। এছাড়া তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।