বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৪৯:০০

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩০ বছর আগের স্মৃতিতে কাতর সেই স্কুলশিক্ষক!

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩০ বছর আগের স্মৃতিতে কাতর সেই স্কুলশিক্ষক!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : প্রায় ৩০ বছর আগের কথা। ময়মনসিংহের গৌরীপুর স্টেডিয়ামে নির্বাচনী জনসভার মঞ্চে উঠেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জনতার ভিড় ঠেলে বিএনপি নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গণি মণ্ডল তার দুই সন্তানকে নিয়ে মঞ্চে ওঠেন। এসময় দুই ভাইবোন অটোগ্রাফের জন্য ডায়েরি এগিয়ে দেয় খালেদা জিয়ার দিকে। হাস্যোজ্জ্বলভাবে তিনি ডায়েরিতে অটোগ্রাফ দিয়ে শুভকামনা জানান।

৩০ বছর পর সেই অটোগ্রাফ দেওয়ার ক্যামেরাবন্দি সেই ছবি ও ডায়েরিতে অটোগ্রাফের ছবি শেয়ার করে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন জিনাত আরা তানি। ছবিতে তানি লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন একজন মমতাময়ী মা। কঠিন পরিস্থিতিতেও নিজেকে সামলিয়ে নেওয়ায় ছিল অকুতোভয় এক সাহস।’ এদিকে ছবিটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এই ছবি ও অটোগ্রাফের শেষাংশে তানির মন্তব্য, ‘আমি ভাগ্যে বিশ্বাস করি। বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের মাটিতে মৃত্যুবরণ করতে চেয়েছিলেন। এতটুকু বলতেই হচ্ছে- তিনি সৌভাগ্যবান। কারণ এই দেশের মাটিতেই সম্মানের সঙ্গে তিনি মৃত্যুকে বরণ করেছেন।’

জানা গেছে, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালী গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গণি মণ্ডলের সন্তান ইয়াসিন মণ্ডল জনি ও জিনাত আরা তানি। ১৯৯৬ সালে ২৩ মে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গৌরীপুর স্টেডিয়ামে নির্বাচনী সভার আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি। ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া দলটির প্রার্থী এএফএম নজমূল হুদার পক্ষে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

ওই সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গণি মণ্ডল। নির্বাচনী জনসভায় বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে উঠার পরপরই জনতার ভিড় ঠেলে নিজের দুই সন্তানকে নিয়ে মঞ্চে উঠেন তিনি। দুই ভাইবোন অটোগ্রাফের জন্য ডায়েরি এগিয়ে দেয় খালেদা জিয়ার দিকে। হাস্যোজ্জ্বলভাবে বেগম খালেদা জিয়া ডায়েরিতে অটোগ্রাফ দিয়ে দুই ভাইবোনের জন্য শুভকামনা জানান।

২০০৫ সালে বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গণি মণ্ডল মৃত্যুবরণ করেন। তার বড় ছেলে ইয়াসিন মণ্ডল জনি এখন রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ছোট মেয়ে জিনাত আরা তানি চাকরি করেন গৌরীপুর শেখ লেবু স্মৃতি পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে।

সেদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জিনাত আরা তানি বলেন, ‘সেদিন বুঝি নাই। এই মহাকাব্যের এই মহীয়সীর নারীর স্পর্শ আর অনুভূতি জীবনকে পাল্টে দেয়, দেশকে বদলে দেয়। যার হাত ধরে এ দেশের কোটি মানুষের উন্নয়ন সাধিত হয়। যিনি ছিলেন অদম্য সাহসী, মেধাবী আর জীবন সংগ্রামেও একজন লড়াকু।’

ইয়াসিন মণ্ডল জনি সেদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমি তখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি আর ছোটবোন তানি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বাবার বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকার সুবাদেই আমরা দুই ভাইবোন মঞ্চে উঠে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছবি তোলা ও অটোগ্রাফ নেওয়ার সুযোগ পাই। আজকে তিনি নেই। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’

উল্লেখ্য, সপ্তম জাতীয় সংসদের ওই নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী এএফএম নজমুল হুদা ৩৭ হাজার ১১৪ ভোটে বিজয়ী হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মুজিবুর রহমান ফকির পান ৩১ হাজার ৮২৫ ভোট ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙল প্রতীকে নুরুল আমিন খান পাঠান ২১ হাজার ১৬৩ ভোট পান।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে