সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০১৬, ০২:৩৬:৩৫

বিএনপি নেতাদের নামে চাঁদাবাজি, যা বললেন রিজভী

বিএনপি নেতাদের নামে চাঁদাবাজি, যা বললেন রিজভী

নিউজ ডেস্ক : বিএনপির কাউন্সিলকে সামনে রেখে দেশ এবং বিদেশে দলটির নেতা-কর্মীদেরকে ফোন করে চাঁদা তোলা হচ্ছে বলেও এ সময় অভিযোগ করেছেন যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এক্ষেত্রে তার আগে স্থায়ী কিমিটর সদস্য গয়েস্বর চন্দ্র রায়ের নাম ব্যবহার করেও চাঁদা চাওয়া হয়েছে।

সোমবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, দেশ-বিদেশে আমার নাম দিয়ে কাউন্সিলের কথা বলে ০১৭১১১৯০০০৪, ০১৭৬৪৭৪৬৬৬১ নাম্বারসহ কয়েকটি নাম্বার থেকে ফোন করে চাঁদা তোলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কারো কাছে যদি ওই নাম্বারগুলো থেকে ফোন আসে তাহলে আপনারা তাদেরকে পুলিশে ধরিয়ে দিন।

ইউপি নির্বাচনে অংশ নেওয়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের বাড়ি-ঘরে ক্ষমতাসীনরা হামলা চালাচ্ছে অভিযোগ করে এর তীব্র নিন্দা জানান বিএনপির এই নেতা।

দুর্নীতির কারণে দেশ ধ্বংসের পথে অভিযোগ করে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, জাতি জানতে চায় এ দুর্নীতির শেষ কোথায়?

রিজভী বলেন, কেন্দ্রীভূত স্বৈরতন্ত্রের প্রতিভু শেখ হাসিনা, কথা বলার স্বাধীনতাকে শিকল পরিয়েছেন, যারা সত্য অকপটে উচ্চারণ করেন তাদেরকে অপরাধী সাজিয়ে তাদেরকে রাষ্ট্রদ্রোহী তকমা দাগিয়ে দিচ্ছেন।

গণতন্ত্রকে কালাপানিতে পাঠিয়ে একক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে হাসিনার নির্দয় একদলীয় শাসনের সুঁচ ফোটাচ্ছেন জনগণের শরীরে অবিরতভাবে, যাতে তারা প্রবল অপশাসনকে উল্টে দিতে ঘুরে দাঁড়াতে না পারে। অবরুদ্ধ পরিবেশেও যতটুকু কথা বলা যায়, সেটিকেও উচ্ছেদ করার জন্য নতুন কালো আইন তৈরী করার খসড়া প্রস্তুত হচ্ছে বলে আমরা জেনেছি।

বিভিন্ন ব্যাংকে লুটপাটের পরও সরকার কাউকে সাজা না দেয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করে বিএনপি।

রিজভী বলেন, বেসিক ব্যাংক, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাংক সমূহ এবং পূঁজিবাজারের অর্থ লুন্ঠনের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো কঠোর অবস্থান না থাকার ফলে আজ কেন্দ্রীয় ব্যাংকও হলো লুন্ঠনের শিকার।

তিনি বলেন, আজকে কেন জনগণের টাকা হ্যাকিংয়ের নামে চুরি হচ্ছে, পাচার হয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে, তার কারণ হলো-যখন অর্থমন্ত্রী বলেন-‘হলমার্ক কেলেঙ্কারীর চার হাজার কোটি টাকা বড় অংকের অর্থ নয়’। এরই ধারাবাহিকতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন-‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরি যাওয়ার বিষয়ে কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক আমাকে কিছুই জানায়নি। আমি বিষয়টি পত্রিকায় পড়েছি’।

এবারেও অর্থমন্ত্রী বলেছেন-৮০০ কোটি টাকা হ্যাক করার কথা তিনি কিছু জানেন না। যে সরকার গৃহস্থের বদলে চোরকে নিরাপদ রাখতে বেশী ব্যস্ত থাকে তারা তো কিছুই জানবে না। এই জন্যই দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য একবার বলেছিলেন-‘বর্তমানে সম্পদের ও জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে, যা সঞ্চয় ও ভোগ কাঠামোতে প্রভাব ফেলবে। এ অবস্থায় অর্থ পাচারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।’ এখন সেই প্রবণতা ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে।

এ সময় এ ঘটনাটি ঘটার প্রায় এক মাস পর কেন এটি প্রকাশ হলো ? এতে সুস্পষ্টভাবেই বোঝা যায়-ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার অপপ্রয়াস চলছিল। ইতোমধ্যে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দুর্বল থাকার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এর সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন।

তিনি সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ঐদিন সিসি টিভি ফুটেজের তথ্য উপাত্ত কোথায় গেল ?

রিজভী বলেন, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে অবিলম্বে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার ও এর সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি। শুধুমাত্র অর্থমন্ত্রী এবং গভর্নরের পদত্যাগেই বাংলাদেশের পরিত্রাণ মিলবে না, এদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের মাধ্যমেই দেশ, মানুষ ও গণতন্ত্রের মুক্তি নিশ্চিত হবে।

এছাড়া, বর্তমান সরকারের শাসনামল মানেই সাধারণ মানুষ না খেয়ে থাকাও বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৪ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে