মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০১৬, ০৮:১৬:৪৪

এভাবেই কি হ্যাক হয়েছে বাংলাদেশে ব্যাংকের টাকা?

এভাবেই কি হ্যাক হয়েছে বাংলাদেশে ব্যাংকের টাকা?

ঢাকা : তথ্যপ্রযুক্তির দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘সুইফট’ সিস্টেমে ঢুকে পড়েছিল তৃতীয় পক্ষ। সেই সঙ্গে ছিল কিছু কর্মকর্তার দায়িত্বের ঘাটতি। রিজার্ভের অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সুইফটের বার্তা আদান-প্রদানে যেসব কম্পিউটার নির্দিষ্ট করা, তাতে সুইফট নেটওয়ার্কটি ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কটিও সংযুক্ত ছিল।

ফলে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে ইন্টারনেটের কোনো একটি পথ দিয়ে তৃতীয় পক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্ক-ব্যবস্থার প্রতিরোধকগুলো ভেঙে সেখানে ঢুকে যায়। আর সেই নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে সুইফটে ঢুকে পড়ে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে শুরুতে কোন পথে তৃতীয় পক্ষটি বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি সিস্টেমে ঢুকে পড়েছে, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ জন্য সাইবার বিশেষজ্ঞকে দিয়ে ‘ফরেনসিক’ তদন্ত করানো হচ্ছে। এ তদন্ত শেষ হতে আরও দুই সপ্তাহ লেগে যাবে।

দেশে-বিদেশে আলোড়ন তোলা এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম গত রোববার সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে (সময়ের হিসাবে ৫ ফেব্রুয়ারি) সুইফট ব্যবহার করে অর্থ চুরির জন্য ৩৫টি পরামর্শ বা অ্যাডভাইস পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে। সেখান থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৫টি পরামর্শ কার্যকর হয়ে গেলে তাতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা চলে যায় শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনে।

এদিকে, ৫ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার ছুটির দিনে সুইফটে বার্তা আদান-প্রদানের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের দপ্তরে এসে বেশ কিছু কারিগরি ত্রুটি দেখতে পান। সুইফটের বার্তা আদান-প্রদানের জন্য ব্যবহৃত নির্দিষ্ট কম্পিউটার চালু হচ্ছিল না। এমনকি নির্দিষ্ট কম্পিউটারের সঙ্গে অটো কমান্ডের ভিত্তিতে যুক্ত প্রিন্টারগুলোও ছিল অকেজো। খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে এমন ত্রুটি ধরা পড়ার পরও তাৎক্ষণিকভাবে সেই বিপৎসংকেত ঊর্ধ্বতন মহলে পৌঁছানো হয়নি। পরবর্তী সময়ে ঊর্ধ্বতন মহল বিষয়টি অবগত হলে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। ৯ ফেব্রুয়ারি অর্থ জব্দের অনুরোধ জানিয়ে ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা গতকাল সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থের যে অংশটি ফিলিপাইনে গেছে তার অল্প কিছু অংশ আদায় করা গেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যেসব তথ্য-উপাত্ত রয়েছে তাতে আমরা আশা করছি, পুরো অর্থ আদায় করতে পারব। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব না।-প্রথম আলো
১৫ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে