বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০১৬, ০৫:১২:১২

মির্জা ফখরুলই হচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব

মির্জা ফখরুলই হচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব

মজুমদার ইমরান : অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিএনপির নতুন মহাসচিব হচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ইতিমধ্যে তাকে এমন সবুজ সংকেত দিয়েছে দলের হাইকমান্ড। কাউন্সিলের দিনেই মহাসচিব নিয়োগের এই ঘোষণা দেবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।

এমন কথাই জানিয়েছেন দলটির একাধিক নীতি নির্ধারক। তবে ১৯ মার্চ কাউন্সিল হলেও দলের পূর্ণাঙ্গ জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠনে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কিছুটা সময় নেবেন। অর্থাৎ কাউন্সিল হলেও দলটির পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটি গঠন এক থেকে দেড় মাস সময় লেগে যেতে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেছেন, কাউন্সিলের দিনে মহাসচিব পদের ঘোষণা ছাড়া আর তেমন কোনো চমক থাকছে না। বিএনপি নেতারা জানান, কাউন্সিলরদের মতামত নিয়ে ওই দিনই বিএনপি চেয়ারপার্সন তার ক্ষমতাবলে দলের মহাসচিব নিয়োগের ঘোষণা দেবেন। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠনে কিছুটা সময় নেয়া হতে পারে।

২০১১ সালের ১৬ মার্চ বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন মারা যান। এর পরপরই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। ২০০৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে মির্জা আলমগীরকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব করা হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর প্রায় ছয় বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। এ সময়ের মধ্যে সরকারবিরোধী আন্দোলনে তার বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। কয়েকবার কারাভোগও করেছেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

১৯ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘দুর্নীতি দুঃশাসনের হবে শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ’ সেøাগান নিয়ে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টার দিকে কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। আর কাউন্সিলকে সামনে রেখে ক্ষমতা ও পদ পদবি লাভের জন্য নেতাকর্মীরা নানা ধরনের তদবিরে ব্যস্ত। চলছে গ্রুপিং। কেউ প্রকাশ্যে, কেউ বা পর্দার অন্তরালে থেকে কলকাঠি নাড়ছেন। মহাসচিব হওয়ার দৌড়েও একাধিক শীর্ষ নেতার নাম শোনা গেছে।

স্থায়ী কমিটির এক নবীন সদস্যের নেতৃত্বে জোরদার লবিং হচ্ছে মহাসচিব পদের জন্য। ওই গ্রুপটি মহাসচিব পদের জন্য নিজস্ব বলয় তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের দলের নতুন মহাসচিব হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেই পছন্দ। প্রভাবশালী স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকায় বিএনপি হাইকমান্ডের সামনে মির্জা ফখরুল ছাড়া আর কোনো বিকল্প চয়েসও  নেই।

সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানেরও সবুজ সঙ্কেত রয়েছে।

জানা গেছে,  অন্য যে কোনো বারের চেয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়ে সিরিয়াস। তিনি নিজেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়টি দেখভাল করছেন। নেতাদের আমলনামা দেখছেন। দলীয় অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা, স্থানীয় পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ যথেষ্ট সময় নিয়ে নেতাদের আমলনামা যাচাই-বাছাই করার লক্ষ্যে কাউন্সিল হয়ে গেলেও নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে কিছুটা বিলম্ব হবে। সেক্ষেত্রে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠনের মাস-দেড় মাস সময় লাগতে পারে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কে কোন পদ পাবে তা নির্ধারণ করবেন দলের সম্মানিত কাউন্সিলররা। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই নতুন নির্বাহী কমিটি গঠিত হবে সেখানে কাউন্সিলররা তাদের মতামত চেয়ারপার্সনকে জানাবেন। সেই মতামতের ভিত্তিতে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। কিভাবে কখন কমিটি গঠন হবে, নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও আগামী ১৯ মার্চ বিএনপি একটি সফল-সার্থক কাউন্সিল করতে পারবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। -মানবকণ্ঠ
১৬ মার্চ, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে