শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬, ০২:৩২:৫০

আন্দোলন হবে নতুন কর্মকৌশলে: মির্জা ফখরুল

আন্দোলন হবে নতুন কর্মকৌশলে: মির্জা ফখরুল

নিউজ ডেস্ক : সংগঠন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম চলিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই আন্দোলন ও নির্বাচনই আগামীদিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মকৌশল হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার সকালে রাজধানী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সংগ্রামের পথ হবে কণ্টকাকীর্ণ। তাই এই সংগ্রামে দল, মত, মত ধর্ম, বর্ণের উর্ধ্বে উঠে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, ১/১১ অবৈধ সরকার মাইনাস টু ফর্মূলার নামে দেশকে অরাজনীতিকরণ করার চেষ্টা করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের জন্য তারেক রহমান চ্যালেঞ্জ। এর জন্য তাকে দেশে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু সরকার জানে না যে, যেদিন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন সেই দিন তাকে গণতন্ত্রের বিজয়ী সৈনিক হিসাবে বরণ করবে।

অনিশ্চিয়তা ও সংঘাত মানুষের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের সর্বত্র অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করার জন্য এক সময় ক্ষমতাসীনদের জনগণ জবাব দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দেশে সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি গ্রাস করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুর্নীতি রুখতে আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি। কারণ গণতন্ত্র ব্যতীত উন্নয়ন হতে পারে না।  বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আপসহীনভাবে লড়াই করেছেন। এখনো করছেন। বাংলাদেশে খালেদা জিয়া মানেই গণতন্ত্র, গণতন্ত্র মানেই খালেদা জিয়া।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দাবি করেন, বিগত কয়েক বছরে সরকারের নজিরবিহীন দমন নির্যাতন, পুলিশের গুলি ও সরকার সমর্থকদের নির্যাতনে বিএনপির ৫০২ জন নিহত হয়েছেন, অপহৃত হয়েছেন ২২৩ জন, গুরুতর আহত ৪ হাজার, জেল খেটেছেন ৭৫ হাজার, ২৪ হাজার মামলায় আসামি ৪ লাখ ৩০ হাজার নেতাকর্মী।

বিএনপি হিংসা-বিদ্বেষ, অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিতে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বিএনপি অনেক সংকল্পবদ্ধ, অনেক বেশি উদার রাজনীতিতে বিশ্বাসী দল।’

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। তাই এ নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত নির্বাচন কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক ক্ষেত্র সংকুচিত হলে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হবে না। উপরোন্তু তা উসকে দিতে সাহায্য করবে। তাই গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক দলগুলোকে সুস্থ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

বর্তমানে অর্থনীতি চরম সংকটের মুখে পড়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যাপক দুর্নীতির কারণে সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। কোথাও জবাবদিহিতা নেই। উন্নয়ন গণতন্ত্রের বিকল্প হতে পারে না। টেকসই উন্নয়নের জন্য টেকসই গণতন্ত্র অপরিহার্য।’

গণতন্ত্র ফিরে পেতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সব দেশপ্রেমিক, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল গোষ্ঠী ও ব্যক্তির সমন্বয়ে ইস্পাত কঠিন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
১৯ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে