নিউজ ডেস্ক : তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীদের মনের আশা পূর্ণ হচ্ছে! তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে জেলা পর্যালয়ের নেতাদের দাবির প্রেক্ষিতে বিতর্কিত সেইসব নেতাদের বাদ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেছেন, দলের ভিতরে কিছু বেঈমান আছে, এটা স্বীকার করতে হবে। যখনই আন্দোলন তুঙ্গে যায় তখনই তারা পিছুটান দেয়। তখন আন্দোলন আর ফলপ্রসু হয় না। তাই বেঈমান নেতাদের দল থেকে বাদ দিতে হবে।
রাজধানী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শনিবার রাতে কাউন্সিলের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি আগেও জনগণকে সাথে নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছিল। ভবিষ্যতেও জনগণকে সাথে নিয়ে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে কাজ করবে। ২০৩০ সালের আগে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করা হবে।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র বিয়ে শাদির জন্য হল ভাড়া দেয়া হয়। কিন্তু দেশের অন্যতম একটি বড় রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলের জন্য এ জায়গা ভাড়া দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে আমরা বসুন্ধরা কনভেশন সেন্টার চেয়েছিলাম, প্রথমে দিলেও সরকারের চাপে ওই জায়গাও আমাদের দেয়া হয়নি।
বিএনপির কাউন্সিলে বিদেশি অথিতি আসতে বাধা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের বিদেশি অতিথিদের সময়মত ভিসা দেয়নি ওই দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ । অ্যাম্বাসি। অতিথিদের বলা হয়েছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা ভাল না। তাদেরকে না আসতে বারবার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা কাউন্সিলে অংশ নিয়ে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
এসময় জেলা উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে ১০ শতাংশ মহিলা নেত্রী আনার জন্যও পরামর্শ দেন তিনি।
হ্যাকিং নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা সরকারের জ্ঞাতসারে চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিদেশে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে বলির পাঠা বানানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, হ্যাকিং নয়, ব্যাংকের টাকা চুরি করা হয়েছে। কিন্তু বিদেশে জানাজানি হয়ে যাওয়ার পর ওই ভদ্রলোককে (ড. আতিউর) পদত্যাগ করিয়ে বলির পাঠা বানানো হলো। তবে ভদ্রলোকেরও দোষ আছে। তিনি সত্যটা কেন বললেন না? মেরে ফেলতো? সে সাহস কখনোই পেতো না। হাসিনা নাকি কেঁদেছেন। কাঁদবেনইতো, ছেলে অপকর্ম করবে, আর দায়ভার অন্য কেউ নেবেন।
কিন্তু তিনি কেঁদেছেন, নাকি চোখে গ্লিসারিন দিয়েছেন? বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
হাসিনা মার্কা নির্বাচন নয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত সিটি করপোরেশন, উপজেলা নির্বাচন, পৌর সভা নির্বাচনে সরকার ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে তাদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করেছে। আমরা হাসিনা মার্কা নির্বাচন চাই না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কড়া সমালোচনা করে খালেদা বলেন, রকিবউদ্দীন মানুষ না, তাকে মানুষ এতো গালিগালাজ করে, তবু যান না। হাসিনা-রকিবউদ্দীনের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমরা এবার অনেক সুন্দর নির্বাচন করবো।
খালেদা বলেন, এরশাদ ৮৬’তে বেঈমানি করেছিলেন। দলের মধ্যেও এমন কিছু বেঈমান আছেন, যাদের জন্য আন্দোলনে সেভাবে সফলতা আসেনি। মীরজাফরের রক্ততো অনেকের মধ্যেই আছে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা যখন চায়ের দোকানে যান মানুষ বলে, আপনারা ঠাণ্ডা হয়ে গেলেন কেন? কারণ, তারা অস্থির। তারা জানে, বিএনপি ছাড়া কেউ উদ্ধার করতে পারবে না।’
এরশাদের ব্যাপারে খালেদা বলেন, ‘এরশাদওতো ঠিক নেই। সে পাগল না: বেঈমান। তিনি তালে একদম ঠিক। হাসিনার সঙ্গে তার সম্পর্ক ১৯৮৬ না, ১৯৮২ সাল থেকেই।’
২০ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস