রবিবার, ২০ মার্চ, ২০১৬, ১০:৪২:১৮

দুই দিনে নির্বাচিত হবে ২৩ হাজার প্রধানমন্ত্রী

দুই দিনে নির্বাচিত হবে ২৩ হাজার প্রধানমন্ত্রী

শরীফুল আলম সুমন : একটি দেশে একজনই প্রধানমন্ত্রী থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশে কাল সোমবার ও ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার নির্বাচিত হবে প্রায় ২৩ হাজার প্রধানমন্ত্রী। এত বিপুলসংখ্যক প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও নেই কোনো পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ও দেয়াল লিখন। হাতে লেখা পোস্টার ও লিফলেট ব্যবহার করেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন।

গত বছর মাত্র এক হাজার ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই নির্বাচন হয়েছিল। এবার হবে ২২ হাজার ৯৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ফলে এবারই প্রথম বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একজন করে প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে। প্রতিটি স্কুলে আটজন সদস্য নির্বাচিত হবে। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত সদস্যই হবে ওই স্কুলের প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে প্রতিটি বিদ্যালয়েই সাজ সাজ রব। প্রার্থীরা ব্যস্ত শেষ সময়ের প্রচারণায়।

সারা দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন ২০১৬ উপলক্ষে আজ  রবিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন। সেখানে এর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন তিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।

ব্যানবেইস সূত্র জানায়, কাল সোমবারই সব স্কুলে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যেসব উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন রয়েছে সেখানে ভোট হবে ৩১ মার্চ। এবারের নির্বাচনে স্কুলের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪২৪ এবং মাদ্রাসা ছয় হাজার ৫৬৭টি। ২২ হাজার ৯৯১টি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্বাচিত হবে এক লাখ ৮৩ হাজার ৯২৮ জন প্রতিনিধি। ভোটগ্রহণ চলবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ছাত্রছাত্রীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে আট সদস্যের এই স্টুডেন্টস কেবিনেট। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো শিক্ষার্থী প্রার্থী হতে পারবে। একজন ভোটার সর্বোচ্চ আটটি ভোট দেবে। এর মধ্যে প্রতি শ্রেণিতে একটি করে এবং যেকোনো তিন শ্রেণিতে সর্বোচ্চ দুটি করে ভোট দেওয়া যাবে। ফলে প্রতিটি শ্রেণি থেকে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে।

পাঁচ শ্রেণিতে পাঁচজন নির্বাচনের পর সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিন শ্রেণির আরো তিনজন নির্বাচিত হবে। নির্বাচনী বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন স্ব স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। অন্যান্য নির্বাচনের মতোই ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, ভোটকেন্দ্র, বুথ থাকবে। তবে প্রার্থীদের কোনো প্রতীক দেওয়া হবে না। আর এই কেবিনেটের মেয়াদ হবে এক বছর।

স্টুডেন্টস কেবিনেটের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রথম সভায় সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রতিনিধিকে প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার আলোকে প্রত্যেকের দায়িত্ব বণ্টন এবং সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণি থেকে দুজন করে সহযোগী সদস্য মনোনীত করা হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান আটটি কার্যক্রমের দায়িত্বে নির্বাচিত আটজন প্রতিনিধি থাকবে। দায়িত্বের ক্ষেত্রগুলো হলো পরিবেশ সংরক্ষণ (বিদ্যালয়, আঙিনা ও টয়লেট পরিষ্কার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা), পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানিসম্পদ, বৃক্ষরোপণ ও বাগান তৈরি এবং দিবস ও অনুষ্ঠান উদ্যাপন।

এসব বিষয়ে ব্যানবেইসের গবেষণা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন করেছি। সেখানে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে। কে কাকে ভোট দেবে এখন চলছে সেই হিসাব-নিকাশ। ছাত্রছাত্রীদের ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের বিকাশ এবং গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেই এই নির্বাচনের আয়োজন।’

স্টুডেন্টস কেবিনেট মাসে কমপক্ষে একবার সভা করবে। ছয় মাস পর পর সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে সাধারণ সভা হবে। ২০১৫ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর ২০১০ সাল থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই আদলে নির্বাচন হয়ে আসছে। -কালের কণ্ঠ
২০ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে