মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০১৬, ০৩:০৮:৫৯

এবার বস্তাভর্তি টাকাসহ ধরা খেলেন জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা

এবার বস্তাভর্তি টাকাসহ ধরা খেলেন জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের দুই কোটি টাকা আত্মসাতরে ঘটনা প্রকাশ পেল। ওই কর্মকর্তার নাম রাজিব হাসান। বর্তমানে তিনি জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসের ফিক্সড ডিপোজিট রিসিট (এফডিআর) বিভাগে সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত।

তার বাসা থেকে বস্তাভর্তি ৭৮ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আর অফিসে তার ড্রয়ারে পাওয়া গেছে ১৫ হাজার টাকা। বাকি এক কোটি ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার কোনো হদিস মিলছে না। তার এই কেলেঙ্কারির খবর জানাজানি হলে পুরো ব্যাংক পাড়ায় তৈরি হয় চাঞ্চল্য।

ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২ কোটি টাকা লোপাটের বিষয়টি কয়েক দিন আগে জানা গেছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের রাজিব হাসানের প্রতি সন্দেহ ছিল। সে কারণে তার ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়। সব শেষে প্রায় নিশ্চিত হওয়ার পর তার ধানমন্ডির বাসায় হানা দেয়া হয়। সেখান থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৭৮ লাখ টাকা। ব্যাংক কর্মকর্তারা তাকে আটক করে নিয়ে আসেন।

জানা গেছে, রাজিব হাসানের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের চর ভদ্রাসনে। বছর পাঁচেক আগে তিনি জনতা ব্যাংকে যোগ দেন। তাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, চুরি হওয়া ২ কোটি টাকা এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট অর্থাৎ ব্যাংকের আয়-ব্যয়ের টাকা। তবে অপর একটি সূত্রের দাবি, ওই টাকার কিছু আয়-ব্যয়ের আবার কিছু গ্রাহকের।

এদিকে টাকা আত্মসাৎকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। মঙ্গলবার জনতা ব্যাংকের প্রধান নিবার্হী আবদুস সালামের সাথে বৈঠককালে তিনি এ নির্দেশ দেন।

বৈঠক শেষে আবদুস সালাম বলেন, আত্মসাৎকৃত ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার মধ্যে ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। বাকি টাকা আদায়ের জন্য অ্যাডভান্সড চেক লিখে নেয়া হয়েছে। আমাদের অ্যান্টি ভিজিলেন্স টিম কাজ করছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে খুব শিগগিরই মামলা দায়ের করা হবে। অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। গভর্নরও এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক লোকাল অফিসের মহাব্যবস্থাপক ড. মো. ফরজ আলী জানান, একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে। টাকার পরিমাণ তিনি জানাতে পারেননি। শুধু বলেছেন, এগুলো ব্যাংকের টাকা। কোনো গ্রাহকের নয়। কখন জানতে পারেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রবিবার জানার পর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। কিছু ভাউচারের গরমিল থেকে এ অনিয়মের সূত্রপাত। এখন তদন্ত শেষে বাকিটা বলা যাবে।

মতিঝিল থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, ঘটনাটি শুনেছি এবং খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি ওই কর্মকর্তাকে প্রধান কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। আংশিক টাকা উদ্ধারের দাবি করা হলেও বেশির ভাগ টাকা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এর আগে এটিএম জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েকটি ব্যাংক থেকে প্রথমে ২১ লাখ, পরে ৩৭ কোটি টাকা লোপাট করে হ্যাকাররা।
২২ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে