মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০১৬, ০৬:৩০:২৩

বিষয়টি নিয়ে মামলা করতে পারেন তারেক রহমান : ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান

বিষয়টি নিয়ে মামলা করতে পারেন তারেক রহমান : ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান

নিউজ ডেস্ক : ইন্টারপোলের রেড এলার্ট থেকে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।  পাশাপাশি তার ব্যাপারে বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনের সরবরাহকৃত সব তথ্য ইন্টারপোলের সিস্টেম থেকে মুছে ফেলারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  ফ্রান্সে ইন্টারপোলের হেড অফিস থেকে ১৪ মার্চ তারেক রহমান মনোনীত সলিসিটর ফার্ম পূর্ব লন্ডনের লন্ডনিয়াম সলিসিটর্সকে পাঠানো এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

এ উপলক্ষে ২১ মার্চ সোমবার দুপুরে পুর্ব লন্ডনের এডলার স্ট্রিটস্থ লন্ডনিয়াম সলিসিটর অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম কামরুজ্জামান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার জামান বলেন, সত্যতা যাচাই ছাড়া রের্ড এলার্ট জারি করে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সুনাম ক্ষুন্ন করার দায়ে ইন্টারপোলের কাছে ক্ষতিপুরন দাবি করতে পারেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।  বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষকে ইন্টারপোল কর্তৃক ক্ষতিপুরণ প্রদানের নজির রয়েছে।  তাই তারেক রহমানের নির্দেশনা পেলে তারা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে প্রস্তুত রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সলিসিটর ডেভিড রিকটার। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার এম এ আরেফিন আশরাফ।  বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রেসিডেন্ট এম এ মালিক ও সেক্রেটারি কয়ছর এম আহমদ।

ব্যারিস্টার আশরাফ বলেন, এটা আমাদের জন্য একটি বড় বিজয়। বাংলাদেশের বাইরে হওয়ায় আমরা সত্য উদঘাটনে সচেষ্ট হয়েছি।  আইনি লড়াইয়ের প্রেক্ষিতে ইন্টারপোল কর্তৃক তারেক রহমানের নাম প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়েছে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার অভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল পরিকল্পিতভাবে ও সরকারি মদদে।  সিআইডি কর্মকর্তা আব্দুল কাহহার আকন্দ সরকারকে খুশি করার জন্যই তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেন।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক বলেন, বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে যে বিরোধী নেতাকর্মীদের হয়রানি করার হচ্ছে তা আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত হলো।  ইন্টারপোল তাদের সিস্টেম থেকে তারেক রহমানের রের্ড এলার্ট প্রত্যাহার করার মধ্যদিয়ে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে আনিত সব মামলা মিথ্যা ও বানোয়াট।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সেক্রেটারি কয়ছর এম আহমদ বলেন, বিএনপির কাউন্সিলের একদিন আগে ইন্টারপোল তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানায়।  তাই কাউন্সিলের জন্য এটি ছিল একটি বড় সুখবর। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ কাউন্সিলের আগত সর্বস্তরের নেতাকর্মী এই আনন্দটুকু শেয়ার করেছেন।  

যুক্তরাজ্যে আমরাও আনন্দ শেয়ার করছি।  শিগগিরই আমরা এখানে বড় একটি আনন্দসভা করবো।  তিনি বলেন, আমি আশা করি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারেক রহমানের ওপর থেকে সবধরনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নেবে।  নতুবা এভাবেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একের পর এক তাদের প্রতিটি মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে এই ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার নতুন তদন্ত শুরু হয়।  তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন সিআইডি কর্মকর্তা আব্দুল কাহহার আকন্দ।  তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।  পুলিশের চাকরি চলে যাওয়ার পর তিনি নিজ জেলায় ফিরে গিয়ে সক্রিয় হন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে।

২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান তিনি।  তখন মনোনয়ন না পেলেও শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর আব্দুল কাহহার আকন্দকে পুলিশে পুনর্বহাল করেন।  ২১ আগষ্ট হামলা মামলার বিচার মাঝপথে বন্ধ করে দিয়ে আব্দুল কাহহার আকন্দকেই তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।

২০০৯ সালের ৩ আগস্ট মামলা অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে আব্দুল কাহহার আকন্দ ২০১১ সালের ৩ জুলাই আদালতে সম্পুরক চার্জশিট দাখিল করেন।  এই সর্বশেষ তদন্তে আব্দুল কাহহার আকন্দ চার্জশিটে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম অন্তর্ভুৃক্ত করেন।  

এরপর ২০১২ সালের ১৮ মার্চ পুনরায় বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।  এরপর পুলিশ গত বছরের এপ্রিল মাসে ইন্টারপোলকে রের্ড এলার্ট জারি করার দাবি জানায় এবং ইন্টারপুল ওই মাসে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড এলার্ট জারি করে। -এমজমিন
২২ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে