বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬, ০১:৩৭:০৬

আরেকটি মাইলফলক শেখ হাসিনা-মোদির, এবার মহাকাশের স্বপ্ন

আরেকটি মাইলফলক শেখ হাসিনা-মোদির, এবার মহাকাশের স্বপ্ন

নিউজ ডেস্ক : ভারতের ত্রিপুরা থেকে আন্তঃদেশীয় গ্রিডলাইন দিয়ে বাংলাদেশে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির এবং বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বুধবার সকালে ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একযোগে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনকালে শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ আমদানি আমাদের জ্বালানির চাহিদা পূরণ হবে। বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ রপ্তানিতে ত্রিপুরাসহ এ অঞ্চলের বিকাশে ভূমিকা রাখবে। ২০০৯ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গভীর হয়। বিদ্যুৎ-ব্যান্ডউইথ বিনিময় সে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা থেকে নতুন করে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্বোধনের  মাধ্যমে আমাদের সরকারের আরেকটি প্রতিশ্রুতি পুরণ হলো। এছাড়া ভারতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির মাধ্যমে ভারতের কিছু এলাকাও উপকৃত হবে।

তিনি বলেন, ‘ব্যান্ডউইথ পাওয়ার ফলে ভারতের ত্রিপুরাসহ ঐ এলাকার মানুষের জীবন মানের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে। দুই দেশের মধ্যে এ ধরনের সহযোগিতা উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আরো গতি আসবে। আগামীতে এ ধরনের সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি পাবে ‘

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী বক্তৃতার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সে দেশে ব্যান্ডউইথ আমদানির উদ্বোধান করেন ও দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বক্তৃতা করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

নরেন্দ্র মোদি বলেন. বাংলাদেশের সূচনালগ্ন থেকে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কেমন থাকতে হয় সেটা আমরা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছি। আমাদের এই সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। আমরা একসঙ্গে আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে চাই। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটেও আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে থাকতে চাই।

বক্তব্যের শুরুতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলায় এদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানান। ভারতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করায় তিনি বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

মোদি বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং একটি প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী একসঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করাই বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক কত গভীর। এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় তিনি শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করেছেন। বাংলাদেশের দুর্দিনে সবসময়ই ভারত পাশে ছিল। এখনও আছে, সামনেও থাকবে।

আজ ভারতে দোল উৎসব। এ উপলক্ষে মোদি বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বাংলায় ভারতের জনগণকে শুভেচ্ছা জানান।

মোদি জানান, আজ আমরা ভিডিও কনফারেন্স করছি, রাতে ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচও আছে। আমরা এই খেলাটিও ভালো করে উপভোগ করবো।

আন্তঃদেশীয় এ লাইন দিয়ে ত্রিপুরার পালাটানা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে বাংলাদেশে। বিদ্যুৎ আনতে বাংলাদেশ অংশে ২৭.৮ কি.মি. ও ভারতে অংশে ২৪ কি.মি  সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। লাইনটি বাংলাদেশে কুমিল্লার কসবা দিয়ে প্রবেশ করেছে। সব মিলিয়ে গ্রিড লাইনটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৫২ কিলোমিটার।

আমদানিকৃত এই বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে সাড়ে পাঁচ রুপি বা ৬.৪৩ টাকা। এই বিদ্যুৎ কুমিল্লা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্যবহৃত হবে। তবে ত্রিপুরা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়েছে গত ১৬ মার্চ থেকে। আনুষ্ঠানিকভাবে আমদানি শুরু হলো আজ বুধবার।
 
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর থেকেই এই বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দামের বিষয়টি মীমাংসিত না হওয়ায় তখন থেকে তা আসেনি। গত ৯ জানুয়ারি ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের ঊর্ধ্বতন সরকারি পর্যায়ের এক সভায় দামের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।

এর আগে ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ভেড়ামারা দিয়ে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করে। এই ৫০০ মেগাওয়াটের ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রতি ইউনিট কেনা হচ্ছে আড়াই টাকা দরে। বাকি মেগাওয়াট ইউনিটপ্রতি সাড়ে চার টাকা দরে আনা হচ্ছে।
২৩ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে