নিউজ ডেস্ক : প্রতিবাদ না হলে টনক নড়ে না। কিন্তু আমরা যে বড় অসহায়। প্রতিবাদের ভাষা যে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। তনু, আমাদের ক্ষমা করো বোন। সবকিছু আজ নষ্টদের দখলে। তাই বলে এতোটা। এতো বর্বর হয়ে গেছে মানুষ। এর চেয়ে আর লজ্জার কি আছে। বর্বরতার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ নেই। ফেসবুকে দুই, চারটি স্ট্যাটাস। এরপরই খতম। নাকে তেল দিয়ে ঘুমে যাওয়া।
‘আঁধারি আলো’ই মানুষের মনে জ্বালায় মনুষত্বের আলো। সেই আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে চেয়েছিলেন সোহাগী জাহান তনু। নাট্যচর্চায় পরিশুদ্ধ মানুষ হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কিছু নরপশুর থাবায় অকালে চলে যেতে হলো দুনিয়া ছেড়ে। স্বপ্নের নীল আকাশে আক্রোশের নীল ছেয়ে গেল। উড়ে বেড়ানো সাদা মেঘগুলো ক্রমেই কালো থেকে কালো হয়ে হারিয়ে গেল নিমিষেই।
সোহাগী জাহান তনু, হঠাৎ মনে পড়ে যায় আমার বোনদের কথা। মনে হয়, মেয়েটিতো আমার বোনও হতে পারতো। কিন্তু এ খবর তেমন কোনো তোলপাড় তোলে না। এই কি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ, যেখানে সেখানে তনুরা এভাবেই পৃথিবী থেকে অকালে বিদায় নেবে।
দরিদ্র পরিবারের মেয়েটির স্বপ্ন ছিল অনেক বড় হবে। টিউশনি করে এগিয়ে নিচ্ছিল নিজের পড়ালেখা। কিন্তু নরপশুরা তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। রোববার সন্ধ্যায় অলিপুর এলাকায় প্রাইভেট পড়ানোর জন্য বাসা থেকে বের হয় তনু। আর ফিরে আসেননি তিনি। নরপশুদের শিকারে পরিণত হন তিনি।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ১১টার দিকে তার লাশ পাওয়া যায়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তনু। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথার কিছু ছেঁড়া চুল লাশের পাশে পড়েছিল। তাকে অনৈতিক কাজে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
তনুদের জন্য যদি কেউ না দাঁড়ায়, যদি কোনো প্রতিবাদ না হয় তবে ফের এমন খবর আরো পাবেন। একদিন হয়তো আমাদের চোখ ঝাপসা হয়ে আসবে। তখন কিছু করতে চাইলেও হয়তো সম্ভব হবে না। আমাদের ক্ষমা দিও তনু। কিন্তু আমাদের অক্ষমতাকে ক্ষমা করো না বোন। আমাদের অভিশাপ দাও।
উল্লেখ্য, ২০ মার্চ রোববার রাতে কুমিল্লা ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের কাছ থেকে পুলিশ তনুর লাশ উদ্ধার করে।
২৩ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম