বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৬, ০৪:৫২:১৭

চট্টগ্রাম থেকে মাত্র ২ ঘণ্টায় ঢাকা!

 চট্টগ্রাম থেকে মাত্র ২ ঘণ্টায় ঢাকা!

চট্টগ্রাম : অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, স্বপ্ন কিন্তু সত্য।  স্বপ্নে দেখার ঘটনা মনে হলেও ২০২৩ সালের সোনালী সকাল।  রাজধানীর মতিঝিলে সকাল ১০টায় গুরুত্বপূর্ণ একটি মিটিংয়ে আপনাকে অংশ নিতে হবে।  সকাল ৭টায় চট্টগ্রামের বাসায় ঘুম থেকে উঠে আপনি তৈরি হলেন।  

৮টার কিছু আগে ব্যক্তিগত গাড়িটি নিয়ে রওনা দিলেন ঢাকার উদ্দেশ্যে।  মিটিং শেষে বিকেল ৩টায় আবার চট্টগ্রামের নিজ বাসায় বসেই পরিবারের সাথে দুপুরের খাবার খাচ্ছেন! অবাক হলেন, ঘটনা কিন্তু এমনই।

সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০১৮ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছে ক্ষমতাসীন সরকার।  প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার যাতায়াতে সময় লাগবে মাত্র দুই ঘণ্টা।  এমনটাই জানিয়েছেন সড়ক বিশেষজ্ঞরা।  

২৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়ে।  এ প্রকল্পের মেয়াদ হবে ৪ বছর।  কাজ শেষ হবে ২০২২ সালে।  ২০২৩ সালে মাত্র দুই ঘণ্টায় আসবেন ঢাকায়।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা ও সমাজের বিশিষ্টজনদের নিয়ে ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেস হাইওয়ের প্রস্তাবিত এলাইনমেন্ট এবং নকশা’ সম্পর্কিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানানো হয়।  প্রকল্প ব্যবস্থাপক শিশির কান্তি রাউৎ ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দল প্রধান গ্যাভিন স্ট্র্যাড এ কথা জানান।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আমদানি-রপ্তানিসহ দেশের সিংহভাগ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।  দেশের অর্থনীতি এখনো চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক।  ৯৫ ভাগ আমদানি-রপ্তানি এ পথেই হয়ে থাকে।  দুই লেনের সড়কটি বর্তমানে চার লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ পর্যায়ে।

এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াতে সময় যেমন বাঁচবে তেমনি কমবে দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি।  প্রকল্প ব্যবস্থাপক শিশির কান্তি রাউতের মতে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে সর্বোচ্চ সোয়া দুই ঘণ্টা থেকে আড়াই ঘণ্টার বেশি লাগবে না।  তিন ঘণ্টা কোনোভাবেই নয়।

ভুটান ও নেপালের সাথে সড়ক যোগাযোগ ও চট্টগ্রাম বন্দর বা গভীর সমুদ্রবন্দর ব্যবহার নিয়ে যে সম্ভাব্যতা রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে :

ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়েত থাকবে মোট আটটি লেন।  এর মধ্যে ছয়টি লেন দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের দ্রুতগামী যান চলাচল করবে।  বাকি দু’টি লেন সার্ভিস লেন বা ইমারজেন্সি লেন হিসেবে ব্যবহৃত হবে।  চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত যেসব অর্থনৈতিক জোন আছে সেগুলোর সাথে এর যোগসূত্র রেখেই  তৈরি করা হবে এক্সপ্রেসওয়ে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ২১৭ কিলোমিটার।  মহাসড়কটি এলিভেটেডে ও অ্যাটগ্রেড পদ্ধতির সমন্বয়ে তৈরি হবে।  

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ২১৭ কিলোমিটারের পুরো পথের পরিবর্তে বাজার এলাকা, জংশন ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে এলিভেটেডে বা দ্বিতল সড়ক হবে, যার দৈর্ঘ্য হবে মোট ১৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার।  মহাসড়কের ১৯৭ কিলোমিটার অংশে অ্যাটগ্রেড (ভূমির সমান্তরাল) পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।

এক্সপ্রেসওয়ে সাতটি পয়েন্টে গাড়িগুলো প্রবেশ ও নির্গমন করতে পারবে। পয়েন্টেগুলো হলো ঢাকার মদনপুর, কমিল্লার দাউদকান্দি, ময়নামতি, পদুয়ার বাজার, ফেনী, চট্টগ্রামের বারৈয়ারহাট ও সলিমপুর।  ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সম্পন্ন হলে উপকৃত হবে সবাই।
২৪ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে