নিউজ ডেস্ক : হ্যাকার তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করে বিজ্ঞাপন প্রচার করা চোরের রাজা সাইফুর’স কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমর্থন চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রতিষ্ঠানটির প্রধানকে ‘চোরের রাজা’ আখ্যা দিয়ে তাকে শেষ দেখতে চান তিনি।
২৯ মার্চ মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সাইফুর’স কোচিং সেন্টারের উদাহরণ টানেন শিক্ষামন্ত্রী। আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি ভালো মানুষ হয়ে ওঠার ওপর গুরুত্বারোপ শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, একটা উদাহরণ দেই, কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজকে। কয়েকদিন আগে একটা বিজ্ঞাপন বেরিয়েছে, সাইফুর’স নামে একজন টিচার ছিলেন, তার এমনই রমরমা ব্যবসা। কোচিং বেআইনি, হাইকোর্টের রায়ে দেয়া। আমরাই বেআইনি করেছি, কিন্তু আমার তো শক্তি নেই। অবশ্য এখনই চাইলে একদল ছাত্র নিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে পারি। কিন্তু আমরা সে পথে যাব না।
মন্ত্রী বলেন, তিনি বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। আমি বিস্মিত হলাম জ্ঞানী-গুণী-বুদ্ধিজীবীরা বড় বেশি সোচ্চার হননি। কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষাসচিবকে নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি বলেন, তার মাথায় এতো জ্ঞান…, সেই লোকটাকে আদর্শ হিসেবে ধরে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক, হ্যাকার- সব এক মাপে নিয়ে বলেছেন, আমার কাছে আসো হ্যাকিং ভালো করে শিখে যাও!
উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা সমাজ! তিনি নাকি শিক্ষক ছিলেন, ব্যবসা করার জন্য ছেলেমেয়েদের প্রলোভন দেখাচ্ছেন। ভালো হ্যাকার হতে পারবে। ইংলিশ শিখলে আসো আমার কাছে। আমরা মামলা করছি, আপনাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাই’।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চিন্তা করতে পারছেন, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-গবেষক-হ্যাকার সবাইকে এক সারিতে নিয়েছেন। এই চোরের রাজা, যিনি চোরামি শেখাতে চান, তার বিরুদ্ধে কী হবে- এ দেশের আইন কী বলে, আমরা শেষ পর্যন্ত দেখে ছাড়বো।
অনুষ্ঠানে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক নীলুফার আহমেদ, এথিক্স অ্যাডভান্সড টেকনোলজি লিমিটেডের (ইএটিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ মুবিন খান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির পর গত ১৩ মার্চ একটি সংবাদপত্রে ‘হ্যাকারদের হাতছাড়া’ শিরোনামে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে সমালোচনায় আসে সাইফুর’স কোচিং সেন্টার। ওই বিজ্ঞাপনে হ্যাকার বানানোর কথা বলে ইংরেজি শেখায় প্রলুব্ধ করে সাইফুর’স।
হ্যাকার বানানোর প্ররোচনা দেয়ায় গত ২৩ মার্চ সচিবালয়ে সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন।
এরই মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে সাইফুর’স কোচিং সেন্টারের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলা দায়ের এবং ও গোয়েন্দা সংস্থাকে বিষয়টি জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
সাইফুর’স কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
২৯ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম