মঙ্গলবার, ০৫ এপ্রিল, ২০১৬, ০১:০০:৫৪

আওয়ামী লীগের নয়া ইস্যু ২১ ও ৪১

আওয়ামী লীগের নয়া ইস্যু ২১ ও ৪১

পাভেল হায়দার চৌধুরী : ভিশন ২০২১ ও ২০৪১-ই এখন আওয়ামী লীগের নতুন রাজনৈতিক ইস্যু। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্নীতি কমানো এবং সুশাসন নিশ্চিত করা। মূলত এগুলোকে ঘিরেই ভবিষ্যৎ রাজনীতি করবে আওয়ামী লীগ। আগামী ১০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য দলের জাতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের পর পরই এসব নতুন রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সম্মেলনে এসব ইস্যু গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নতুন দিক-নির্দেশনা আসার কথা রয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী সূত্রগুলো এমন আভাসই দিয়েছেন।

নীতি-নির্ধারণী সূত্র মতে, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং রায় কার্যকর করার ভেতর দিয়ে টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ তাদের আদর্শিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো ইতিমধ্যেই নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছে। তাই ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এক রকম ইস্যু সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে। তাই ভিশন ২১ ও ৪১-কে প্রাধান্য দিয়ে আগামীর রাজনীতি হবে দলটির।

সূত্র মতে, নতুন ইস্যু নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে দলটি কী করবে তা সুনির্দিষ্টভাবে সম্মেলনে নির্ধারণ করা হবে। রাজনৈতিক ‘ফিলসপিক্যাল’ বা ‘স্ট্যাটিজিক্যাল’ গাইডলাইনও এ সম্মেলনে ঠিক করা হবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।

নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত করা, ইতিহাস বিকৃতি রোধ, জঙ্গিবাদ নির্মূল, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত প্রায় সব রাজনৈতিক ইস্যু ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে অথবা নিষ্পত্তির পথে। তাই দলটির রাজনীতিতে আসলেই এক রকম ইস্যু সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে। তাই দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি অর্জনে রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে মাঠে রাজনীতি করবে উপ-মহাদেশের প্রাচীন এ দলটি।

নীতি-নির্ধারণী সূত্রগুলো আরও জানান, নতুন ইস্যুগুলোর মধ্যে আরও থাকবে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, দেশবিরোধী চক্রান্ত-চক্র নির্মূল করা এবং বিএনপির অপরাজনীতির চর্চা বন্ধ করা। যেহেতু নতুন ইস্যুর ভেতরে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যও আমাদের রয়েছে তাই সুশাসন নিশ্চিত করার পূর্বশর্তই হলো- জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, দেশবিরোধী চক্রান্ত-চক্র নির্মূল করা এবং বিএনপির অপরাজনীতির চর্চা বন্ধ করা। তা না করা গেলে সুশাসন নিশ্চিত করা যাবে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা সাত বছর ক্ষমতায় থেকে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত আদর্শিক ও রাজনৈতিক ইস্যুগুলোর নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, সঠিক নেতৃত্বের কারণে এসব ইস্যুগুলো আমরা এত তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছি যে, এক পর্যায়ে আমরা ইস্যু সংকটে পড়তে শুরু করেছি। তিনি বলেন, এখন আমাদের রাজনীতির মূল ইস্যু হবে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি। শেখ হাসিনা এ জন্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন বলেন, প্রায় সব দেশেই ‘আনস্লভ’ কিছু ইস্যু থাকে যার সমাধান না হলে উন্নয়ন অগ্রগতি সম্ভব হয়ে ওঠে না। আমাদের দেশেও এ ধরনের কিছু অমীমাংসিত ইস্যু ছিল। যা গত দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও রায় কার্যকর করা। এগুলো আমাদের রাজনৈতিক ও আদর্শিক ইস্যুও বলা যায়।

তিনি বলেন, আদর্শিক ও রাজনৈতিক এসব ইস্যু নিষ্পত্তির ভেতর দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে আমরাই পারি। লেনিন বলেন, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ইস্যু ভিশন ২১ ও ৪১। এর মধ্যে ‘প্রায়রিটি বেসিসে’ করতে হবে উন্নয়ন। সঙ্গে থাকবে দুর্নীতিমুক্ত ও সুশাসন নিশ্চিত করা। -বাংলা ট্রিবিউন
০৫ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে