মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৬, ০১:৩৪:৪৪

মাত্র ৫০০ টাকার জন্য গলা কেটে হত্যা!

মাত্র ৫০০ টাকার জন্য গলা কেটে হত্যা!

জাতীয় ডেস্ক: বিধবা রহিমা বেগম। তাঁর দুই মেয়ে থাকেন শ্বশুরবাড়িতে। বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। সাড়ে ছয় মাস আগে রহিমার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনেরা জানতেন, তাঁর কোনো শত্রু নেই। তাই হত্যাকাণ্ডের জন্য তাঁরা কাউকে সন্দেহও করতে পারছিলেন না। অবশেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) রহিমা হত্যা-রহস্য উদ্ঘাটন করেছে। মাত্র ৫০০ টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করেছেন এক প্রতিবেশী।-সিআইডি।

গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেপুর ইউনিয়নের আলাওলপাড়ায় একটি জঙ্গল থেকে রহিমা বেগমের (৫০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় নিহত রহিমার ভাই মোহাম্মদ ইসহাক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, প্রথম দুই মাস মামলাটি তদন্ত করেন হাটহাজারী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) সেন্টু মিয়া। কিন্তু হত্যার রহস্য উদঘটিত না হওয়ায় মামলাটি তদন্তের জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে সিআইডিতে পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন সিআইডির চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিদর্শক আহমেদ উল্লাহ ভূঁইয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত করার সময় নিহত নারীর স্বজনেরা কোনো সূত্র দিতে পারেননি। তাঁদের ধারণা, রহিমার সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না। বেশ কয়েকবার ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর ওই নারীর এক মেয়ে জানান, মো. আলমগীর নামের স্থানীয় এক বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির সঙ্গে তাঁর মায়ের বেশ কয়েকবার বাড়াবাড়ি হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। কিন্তু তাঁকে সন্দেহ করতে পারছেন না।

সিআইডি সূত্র জানায়, পরে তারা জানতে পারে ঘটনার পর আলমগীর এলাকা ছেড়ে গেছেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি এলেও থাকতেন না। ২৬ মার্চ আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি রহিমাকে খুনের কথা স্বীকার করেন। পরদিন তাঁকে চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাহমুদুল হাসানের আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সিআইডি সূত্র জানায়, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে আলমগীর বলেন, তিনি রহিমার ঘরে বৈদ্যুতিক বাতির লাইনের কাজ করেছিলেন। সেই কাজ বাবদ তাঁর কাছে ৫০০ টাকা পেতেন। কিন্তু রহিমা তাঁকে টাকাগুলো দিচ্ছিলেন না। টাকা চাইতে গেলে রহিমা রেগে যেতেন। ঘটনার দিন আলাওলপাড়া জঙ্গলে ঘাস কাটছিলেন রহিমা। সে সময় টাকা চাইতে গেলে তিনি (রহিমা) হাতে থাকা কাঁচি দিয়ে তাঁকে মারতে আসেন। একপর্যায়ে তিনি ওই কাঁচি দিয়ে রহিমাকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যান।

মামলার তদারক কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, মাত্র ৫০০ টাকার জন্য রহিমাকে গলা কেটে হত্যা করেছেন তারই প্রতিবেশী বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি আলমগীর।-প্রথম আলো
১২ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে