বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ০১:২৭:০১

ধর্মকে আঘাত মুক্তচিন্তা নয়, নোংরামি: প্রধানমন্ত্রী

ধর্মকে আঘাত মুক্তচিন্তা নয়, নোংরামি: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : মুক্তচিন্তা প্রকাশের নামে কোনো ধর্মের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত সহ্য করবেন না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে এলে তাদের উদ্দেশে তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কেউ কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবে না। ধর্মকে আঘাত করে লেখাকে অনেকে মুক্তচিন্তা বলেন। আমার কাছে এটা নোংরামি মনে হয়। আমি যে নবীকে মানি তাকে কটাক্ষ করে কোনো কথা বলা হলে সেটি মানা সম্ভব নয়।

পহেলা বৈশাখ উদযাপন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সকাল থেকে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দেশবাসীর আনন্দ উদযাপন দেখে ভাল লাগছে। বছরটা সুন্দরভাবে শুরু হয়েছে, এটা যেন অব্যাহত থাকে।

তিনি বলেন, সবসময়ই দুঃশ্চিন্তায় থাকি, কখন কী ঘটে যায়। আশা করি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারব।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বলেছি বিকেল পাঁচটার মধ্যে প্রকাশ্য-বহিরাঙ্গনের অনুষ্ঠানগুলো শেষ করতে হবে। এতেই কারো কারো আপত্তি। কিন্ত কেন? যেহেতু আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে, কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তা সম্ভব। আমাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেটা কোন পথে কিভাবে দিতে পারবো, তার নির্দেশনা সরকারই দেবে। আর আশা করি সকলেই এই নির্দেশনা মেনে চলবে।

প্যারিস, বেলজিয়াম, যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণও তুলে আনেন শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, আমাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেটা কোন পথে কিভাবে দিতে পারবো, তার নির্দেশনা সরকারই দেবে। আর আশা করি সকলেই এই নির্দেশনা মেনে চলবে।

সমালোচকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও অঘটন ঘটে গেলে সে দায়িত্ব কে নেবে? যিনি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তিনি কি সে দায়িত্ব নেবেন?

নির্দেশনাগুলো মেনে দেশবাসী সুন্দর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে, প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বলেন, আমি দেখছি দেশবাসী সেটাই করে যাচ্ছে। আমাদের সবাই সবকিছু মেনে চলে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুসলমান আর তার পাশাপাশি বাঙালি জাতি। বাঙালি হিসেবেই আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। সে কথা ভুললেও চলবে না। আর পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতির উৎসব এই উৎসব উদযাপন দেশের সব ধর্ম-বর্নের মানুষের।

তিনি বলেন, প্রতিটি দেশ বা জাতি তার নিজস্ব জাতিসত্বা ও ভৌগলিক সীমারেখার দিয়ে পরিচিত হবে, তাতে তার ধর্মীয় পরিচয়ের কোনও বাধা থাকে না। আরবীয়, কুয়েতি, ফিলিস্তিনিরাও যেমন মুসলমান আমরা বাঙালির একটা বড় অংশ মুসলমান।

শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম ধর্মে অন্য কোনও ধর্মের ওপর আঘাত দেওয়ার কথা বলা হয়নি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উক্তি ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করোনা’। কাজেই বোমা মেরে মানুষকে হত্যা করা, মানুষকে হুমকি দেওয়া, এটা ধর্মের অবমাননা, বদনাম। আমার প্রশ্ন এরাই নিজেরাই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে কি না?

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও সতীশচন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ সিনিয়র নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়েরও নেতা-কর্মীর প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। গণভবন সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সিনিয়র নেতারা।
১৪ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে