শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০৫:৪৮:০৯

জয়-পরাজয় উভয়েই লাভ দেখছে বিএনপি

জয়-পরাজয় উভয়েই লাভ দেখছে বিএনপি

মাহমুদ আজহার: তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়েও ভাবনা নেই বিএনপির। সহিংসতার এ নির্বাচনে হার-জিৎ দুটিতেই লাভ দেখছে দলটি। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, নিকট অতীতের মতো এবারের ইউপি নির্বাচনেও ‘ভোট ডাকাতি’ হবে। স্থানীয় প্রশাসনের মদদে সরকারি দলের কর্মী-সমর্থকরা সন্ত্রাসের মাধ্যমে জনগণের ফল ছিনিয়ে নেবে। এটা গণমাধ্যমের সুবাদে দেশের জনগণের পাশাপাশি বিশ্ববাসী দেখতে পাচ্ছে। সরকার যে জনগণের ভোটের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করে না, তা আবারও প্রমাণ পাবে। অন্যদিকে সরকারের যদি শুভবুদ্ধির উদয় হয় তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি অন্তত ৮০ ভাগ ইউপিতেই বিজয়ী হবে। এতেও বিএনপির রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল যে জনগণের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে না তা বিগত ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনেই বিশ্ববাসী দেখেছে। সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনের নগ্ন হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সরকার পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকেই ধ্বংস করে দিয়েছে। ভোটের নামে তামাশা চলছে। এর পরও বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে, জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন। ইউপিতে অংশ নেওয়ার কারণে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাবের পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে দল শক্তিশালী হবে বলে আমি মনে করি।’ জানা যায়, ইউপি নির্বাচন নিয়ে বিএনপি অনেকটাই হাল ছেড়ে দিয়েছে। এর পরও শেষ ধাপ পর্যন্ত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে দলটি। আজকের নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটর করবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ একটি টিম। নানা অনিয়ম নিয়ে নির্বাচন কমিশনে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন নজরুল ইসলাম খান। অনিয়ম তুলে ধরে নয়াপল্টন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী। গুলশান কার্যালয়ে এমরান সালেহ প্রিন্সের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ করবে। তৃণমূল পর্যায়েও পর্যবেক্ষণ টিম কাজ করবে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সবাইকে একযোগে কাজ করতে মাঠ পর্যায়ে সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, অবিলম্বে এলাকার  সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন। সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, ক্ষমতাসীন দলের অন্যায়-অত্যাচার, ভোট জালিয়াতি-ডাকাতি ও প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নেতা-কর্মীদের সাহস জোগাতে হবে। এসব কার্যক্রম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির সামনে তুলে ধরবেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জানা যায়, প্রথম দুই ধাপের তুলনায় তৃতীয় ধাপ থেকে পরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয় বিএনপি। এ লক্ষ্যে সিনিয়র নেতাদের নেতৃত্বে বিভাগওয়ারি হাইপ্রোফাইলের ৯টি পর্যবেক্ষণ কমিটিও গঠন করা হয়। কেন্দ্র থেকে মাঠে যেতে তাদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিকাংশ নেতাই মাঠে যাননি বলে প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন। চতুর্থ ধাপ থেকে মাঠে যাবেন বলেও একাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জানিয়েছেন। জানা যায়, ভোট কেন্দ্র পাহারা দিতে এবারও বিএনপির হাইকমান্ড থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কোনো গোলযোগ হলে সঙ্গে সঙ্গেই তা লিখিতভাবে স্থানীয় রিটার্নিং অফিসারের পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় মনিটর টিমের কাছে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণা পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের কেন্দ্র পাহারা দেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। বিএনপির সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে জয়-পরাজয় আমাদের মুখ্য বিষয় নয়। কারণ আমরা নিকট অতীতে যত নির্বাচন দেখেছি, তাতে ভোট ডাকাতি হয়েছে, কেন্দ্র দখলের মহোৎসব হয়েছে, এতে আমরা বুঝতে পেরেছি, এবারও জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না। তাই ইউপিতেও জয় নিয়ে আমরা খুব একটা ভাবছি না। তবে এর মাধ্যমে সরকারের নগ্ন মনোভাব আরও প্রকাশ পাবে। এ ছাড়া তৃণমূলে সাংগঠনিক ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলোও চিহ্নিত করতে পারব।- বিডি প্রতিদিন

২৩ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে